রমজান মাসজুড়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা রোজা রাখেন। নির্দিষ্ট সময়ে সাহরি খেয়ে রোজা রাখেন। এরপর মাগরিব আযানের ধ্বনি শুনে ইফতার করেন। এর মাঝে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আর তারাবিহ নামাজ আদায় করেন। এভাবেই একটি একটি করে রোজা সম্পন্ন করে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা।
রোজা নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মনীতি হাদিসে বর্ণিত রয়েছে। তবে এর বাইরেও রোজা নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা থাকে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে রোজা ভাঙ্গা নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা বেশি থাকে। চলুন জেনে নেই, রোজা সম্বন্ধে প্রচলিত ভুল ধারণা কোনগুলো।
- মুখের লালা গিলে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যায় এটা ভুল ধারণা। এই ধারণা থেকে সাধারণ মানুষ যেখানে সেখানে থু থু ফেলে। যা অস্বাস্থ্যকর। অথচ ধর্মে এই বিষয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। মুখের লালা গিলে ফেললে রোজা ভাঙ্গে না। তবে অন্য কারও মুখের লালা পেটে গেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
- রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা যায় না। এতে রোজা হালকা হয়ে যায়। এটাও ভুল ধারণা। বরং দীর্ঘ সময় দাঁত ব্রাশ না করলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। এতে অন্যরাও বিব্রত হন। এটি নিয়েও ধর্মে কোনো নির্দেশ নেই। তবে ব্রাশ সাবধানে করতে হবে। যেন পেস্ট বা পানি ভুলেও গলায় না যায়। এতে রোজা মাকরূহ হতে পারে। তাই সাহরী খাওয়ার পরই ব্রাশ করে নেওয়া ভালো।
- অনেকের ধারণা, রোজা রেখে চুল, দাড়ি ও নখ কাটা যাবে না। এই ধারণাও ঠিক নয়। কারণ রক্ত প্রবাহিত না হলে এগুলো কাটায় কোনো বাধা নেই। যেহেতু রক্ত বের হলে রোজা ভেঙ্গে যায়। তাই এসব কাটার সময় সাবধানে থাকতে হবে। তাই রোজা রেখে চুল, দাড়ি কিংবা নখ সাবধানে কাটতে হবে। যেন রক্ত না বের হয়। এছাড়াও পুরুষরা দিনে বা রাতে যেকোনো সময়ই দাড়ি কামাতে পারবেন। এতে কোনো ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা নেই।
- রমজান মাসে যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে হবে বলেও মনে করেন অনেকে। এটাও ঠিক নয়। শুধুমাত্র রোজা থাকা অবস্থায় যৌন সম্পর্ক করা যাবে না। অন্যসময় যৌন সম্পর্কে কোনো বাধা নেই।
- রোজা রেখে সুগন্ধি ব্যবহার করা যায় না। এটিও ভিত্তিহীন ধারণা। সুগন্ধি আতর ব্যবহার করা যাবে। এটি ব্যবহারে কোনও নিষেধ নেই। তবে পারফিউম ব্যবহার করা যাবে না। এটি চর্বি দিয়ে তৈরি হয়ে থাকতে পারে। যা ব্যবহারের সালাত আদায় হবে না। তাই সুগন্ধি আতর ব্যবহার করা ভালো। সুগন্ধি হালাল উৎপাদন হলে অবশ্যই ব্যবহার করা যাবে।
- রোজা রেখে অনেকেই ভুলবশত কিছু খেয়ে ফেলেন বা পানি পান করে ফেলেন। এতে রোজা ভেঙ্গে যায় বলে মনে করেন। কিন্তু ‘ভুল করে’ পানাহার করে ফেললে রোজা ভাঙ্গবে না। কারণ মনের ভুলে ভরপেট খাবার খেলেও রোজা ভেঙ্গে যাওয়ার কথা ইসলামে বলা হয়নি। এতে রোজা মাকরূহ হতে পারে। তবে যদি ব্যক্তি ইচ্ছা করে পানাহার করে রোজা ভেঙ্গে যাবে।