শরৎকাল মানেই কাশবন। এই সময় কাশফুলের শুভ্রতায় ছেয়ে যায় চারপাশ। শহরের দালানের ভিড়ে কোথাও খালি জায়গা পেলেই মাথা উঁচু করে জেগে উঠে কাশবন। সারি সারি হয়ে ফুটে কাশফুল। সাদা রঙের কাশফুলের শুভ্রতায় ভরে উঠে মনপ্রাণ। ব্যস্তজীবনে খানিকটা প্রশান্তি ছোয়া লাগে। তাইতো সুযোগ পেলেই কাশফুল দেখতে ছুটে যাচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ।
শরতের স্নিগ্ধ বিকেলে কাশফুল যেন অন্যরকম অনুভূতি দেয়। শরৎ আসে নানা উৎসবের আগমনী বার্তা নিয়ে। প্রকৃতিতে শরতের ছোঁয়া লাগে। সেই নিয়মেই জেগে উঠে সারি সারি কাশফুল। বৃষ্টিমুখর আবহাওয়ার মাঝেও এবার প্রকৃতি তার নিজের রূপে ফিরেছে। রাজধানীর বিভিন্ন খোলা স্থানে দেখা মিলছে সাদা কাশবন। হালকা, নরম, তুলতুলে কাশফুলে কিছুক্ষণ পরপরই শরতের বাতাসের ছোয়া লাগে। আর একসঙ্গে নুয়িয়ে পড়ে পুরো কাশবন। যেন মনে হয়, সব কাশফুল একসঙ্গে হেসে উঠছে আর দোল খাচ্ছে। প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য্য দেখতে ছুটে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। কাশফুলের সৌন্দর্য যেন শরতের স্নিগ্ধ বিকেলের রূপকে অন্যমাত্রা এনে দিয়েছে।
ইট, পাথর আর কংক্রিটের এ শহর থেকে কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস নিতে ঘুরে আসতে পারেন কাশবন থেকে। রাজধানীর দিয়াবাড়ি, আফতার নগর, ১০০ ফিট রাস্তার ধারে এবং অন্যান্য খোলা স্থানে জেগে উঠেছে এই কাশবন। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষরা ভিড় করছেন সেখানে। বিকেলের অবসর সময়টা যেন ওখানেই কাটে অনেকের। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সীরাই সেসব স্থানে যাচ্ছে কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
কাশবনের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি সময়টাকে আরও বিশেষ করে তুলতে সেখানে খাবারেরও আয়োজন করে বসেছেন দোকানিরা। মুখরোচক সব খাবার নিয়ে প্রকৃতিপ্রেমিদের পেটও ভরাচ্ছেন। দিয়াবাড়িসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের কাশবনের সামনে মিলবে মজাদার সব স্ট্রিট ফুড। যার মধ্যে রয়েছে ফুচকা আর চটপটি, ঝালমুড়ি, হাওয়াই মিঠাই, আইসক্রিমসহ নানা খাবার। ফুডকার্টের পাশে ছোট্ট বসার জায়গাও রয়েছে। কাশবনের অপর পাশে জলাধার আর সঙ্গে মৃদু বাতাস। এমন স্নিগ্ধ বিকেলে পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে সময় কাটাতে সবারই ভালো লাগবে।
কাশবনের সেসব স্থানে গিয়ে দেখা যায়, মোবাইলফোনের ক্যামেরা হাতে অনেকেই সেই সৌন্দর্যকে ফ্রেমবন্দি করছেন। অনেকে আবার দামী ক্যামেরা হাতে নিজের ফটোসেশনও করছেন। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য ভিডিও বানাতে ব্যস্ত। নাচে, গানে শুটিংও চলে কোথাও কোথাও। আবার কাশবনের সৌন্দর্য্যে নিজেকে ডুবিয়ে দিয়ে প্রকৃতির প্রেমে হারিয়ে যাচ্ছেন অনেকে।
কাশবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো ফ্রেমবন্দি করতে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারও রয়েছেন। যারা আপনার ইচ্ছেমতো সব ছবি তুলে দিবেন। একটি ছবির জন্য ২০ টাকা গুণতে হবে আপনাকে। তাই হাতে দামী ক্যামেরা না থাকলেও চিন্তা নেই, কাশফুলের সৌন্দর্য্যকে ফ্রেমবন্দি করতে সেসব ফটোগ্রাফাররাই যথেষ্ট।