কোরবানির ঈদে অসংখ্য পশু কোরবানি হয়। যার মাংস খাওয়া আল্লাহ তাআলা হালাল করেছেন এবং ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাইকে খাওয়াতে বলেছেন। কোরবানির পশুর মাংস সরাসরি যেমন বিতরণও করা যাবে। চামড়া, পরিধেয় কাপড় ও দড়িও নিজে ব্যবহার করা যাবে। তবে কোরবানির পশুর কোনো কিছু বিক্রি করা যাবে না।
কোরবানির পশু থেকে মাংস খাওয়া ছাড়া অন্য কোনোভাবে উপকৃত হওয়ার সুযোগ নেই। তাই কোরবানির মাংস বেচাকেনা করা জায়েজ নেই। একইভাবে কোরবানির পশুর চামড়া, দড়ি ইত্যাদিও বিক্রি করা যাবে না। বিক্রি করলেই সেই টাকা সদকা করে দিতে হবে।
হাদিসে এসেছে, আলি ইবনে আবি তালিব (রা.) বলেছেন, “নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে তার (কোরবানির উটের) আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করতে বলেছিলেন। তিনি কোরবানির পশুর গোশত, চামড়া ও আচ্ছাদনের কাপড় সদকা করতে আদেশ করেন এবং এর কোনো অংশ কসাইকে দিতে নিষেধ করেন।” তিনি বলেন, “আমরা তাকে (তার পারিশ্রমিক) নিজের পক্ষ থেকে দেব।” (বুখারি: ১/২৩২)
কোরবানির পশুর হাড়ও বিক্রি করা যাবে না। করলে মূল্য সদকা করে দিতে হবে। (বাদায়িউস সানায়ি ৪/২২৫)
কাজের লোককে কি কোরবানির মাংস দেওয়া যাবে?
অবশ্যই কাজের লোককে কোরবানির মাংস দেওয়া যাবে। তবে তা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নয়। কোরবানির পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েজ নয়। অবশ্য এ সময় ঘরের অন্য সদস্যদের মতো কাজের লোকদেরও গোশত খাওয়ানো যাবে। (আহকামুল কোরআন ৩/২৩৭)
কোরবানির পশু জবাই করে পারিশ্রমিক দেওয়া-নেওয়া জায়েজ, এতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে কোরবানির পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যাবে না, এটি জায়েজ নেই। (কিফায়াতুল মুফতি ৮/২৬৫)
গরিবরা কি কোরবানির মাংস বিক্রি করতে পারবে?
সাধারণত কোরবানির মাংস আত্মীয়-স্বজন ও দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়। বিতরণ করার পর এই মাংসের মালিক তখন আর কোরবানিদাতা থাকে না। যাকে দেওয়া হলো তিনি মালিক। মালিক হিসেবে এই মাংস তিনি যা খুশি করতে পারবেন।
কোনো দরিদ্র ব্যক্তি হয়ত ১০-১৫ কেজি মাংস অন্যের থেকে পেয়ে থাকেন। তিনি তো একসঙ্গে সেই মাংস রান্না করতে পারবেন না। অথবা তার সংরক্ষণের ব্যবস্থা নাও থাকতে পারে।
আবার শুধু মাংস নয়, তার মসলা, চাল, ডালও লাগবে। সেক্ষেত্রে মাংস বিক্রি করে তিনি হয়ত সেই জিনিসপত্র সংগ্রহ করবেন। তবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে মাংস সংগ্রহ করা অনুচিত কাজ।
এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে যে, এমন ব্যক্তির হাতে কোরবানির মাংস দেওয়া যাবে না যে মাংস বিক্রি করে নেশা করবে বা কোনো হারাম কাজে লিপ্ত হবে। যে কাউকে কোনো কিছু দান করলে তার ব্যাপারে খোঁজ নিতে হবে অবশ্যই।