মা শব্দটির মধ্যে এমন মায়া জড়িয়ে আছে, যার ডাকেই যেন এক শান্তির অনুভূতি বিরাজ করে সন্তানের মধ্যে। সন্তান জন্মের পর থেকে শুরু হয়ে যায় এক মায়ের যুদ্ধ। সন্তানকে বড় করা, সুশিক্ষা প্রদান করা নিয়ে মায়েদের দুশ্চিন্তার অন্ত থাকে না।
কিন্তু এক মা কি কখনো ভুল হতে পারে। হতে পারে। অনেক সময় মাতৃত্ব সন্তানদের বেড়ে ওঠায় বাধা হতে পারে। ঠিক কিভাবে মা ভুল করে থাকেন চলুন জেনে নেই—
নিজের হাতে খাওয়ানো: স্বাভাবিকভাবে একটি শিশুর দেড় বছর বয়স থেকেই নিজের হাতে খেতে পারার মত অবস্থা শুরু হয়। কিন্তু আমাদের আশেপাশে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অনেক মা আছেন বাচ্চার বয়স ৪-৫ বছর হয়ে গেলেও নিজের হাতে খাইয়ে দেন। এতে করে করে শিশুটি নিজের মাকে ছাড়া অন্য কারও ওপর নির্ভর করতে পারে না। খাবারের স্বাদ সঠিকভাবে বুঝতে পারে না। মায়ের দেওয়া নির্দিষ্ট খাবারের বাইরে অন্য কোনো খাবারে কোনো আগ্রহ থাকে না শিশুটির।
ব্যথা পেলে ভুল প্রতিক্রিয়া দেওয়া: আপনার বাচ্চা সামান্য ব্যথা পেলে কি আপনি দৌড়ে গিয়ে ধরতে যান, কিংবা যেখানে ব্যথা পেয়েছে সেখানে মেরে দিয়ে বাচ্চার কান্না থামানোর চেষ্টা করেন? তাহলে আপনি ভুল করছেন। এতে করে আপনার বাচ্চাটি প্রতিকূল পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিখতে পারছে না। এর মাধ্যমে আপনি তাকে অভয় দিচ্ছেন আপনি সব সময় তার আশেপাশে আছেন। এতে করে বাচ্চাটি ব্যথা পাওয়ার পর তা সহ্য করার ক্ষমতা কমে যায়। আপনার শিশুটি পড়ে গিয়ে ব্যথা পেলে তাকে নিজে নিজে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করুন।
সকল কাজে নিজে করে দেওয়া: আপনার শিশুর বয়স যদি ৪ বছর বা তার বেশি হয়, তাহলে অল্প করে করে কিছু কাজ করাতে অভ্যস্ত করানো ভালো। হতে পারে নিজের জামাটি ভাঁজ করা, জুতা গুছিয়ে রাখা, খেলনা গুছানো ইত্যাদি কাজ করতে দিন। এতে করে শিশুরা দায়িত্বশীল হয়। কিন্তু অনেক মা আছেন, বাচ্চার এখনো এসব করার সময় হয়নি বলে নিজেই সব করে দেন।
ভুল উপলব্ধি করতে না শেখানো: মায়েরা মাতৃত্বের কারণেই সন্তানদের ‘তুমিই সেরা’ এই উপলব্ধিতে বড় করতে থাকেন। এবং সন্তানরা কোনো ভুল করলে খুব একটা নজরে না নিয়ে ভাবেন এখন ছোট বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে। আপনি ভুলটি সেখানেই করছেন। বাচ্চার ভুল হলে ওকে উপলব্ধি করান ও ভুল করছে। ‘সরি’ বলতে শেখান। এবং আপনিও যদি ভুল করে থাকেন সন্তানের কাছে, তাহলে আপনিও ভুলটি স্বীকার করুন। এতে করে সন্তান বুঝতে শেখে ভুল করলেই ক্ষমা চাওয়া উচিত।
মায়েদের সঠিক অভ্যাস: শিশুরা সবচেয়ে বেশি অনুকরণ করে থাকে মাকে। মায়ের প্রতিটি অভ্যাস যেন শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। কিন্তু মা তো দিনশেষে একজন মানুষ, ভুল তো হতেই পারে। তাই মা যদি নিজের বদ অভ্যাস যেমন- অতিরিক্ত রাগ, সময়ের কাজ সময়ে না করা এসব নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। শিশুরা সবচেয়ে বেশি মায়ের কাছের হয়। তাই শিশুর কথা ভেবে না হয় একজন মা নিজেকে শক্ত করে শিশুর জন্য সঠিক কাজটি করুক। মায়ের ভালোবাসা, মাতৃত্বের কোনো কমতি কখনো এতে কমার নয়।