আবহাওয়ার প্রতিকূলতায় ঝড় বৃষ্টি হয়। এরমধ্যে প্রবল ঝড়ও হয়। যা জীবননাশের কারণ হয়ে দাড়ায়। মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া এবং ঝড়ের সময় নিরাপদে থাকার জন্য় দোয়া পড়তে বলেছেন। পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন দোয়া রয়েছে যা পড়লে এবং জিকির করলে আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের বিপদ থেকে রক্ষা করেন। আবার ঝড়-তুফান, অধিক বৃষ্টির অনিষ্ট এবং বজ্রপাত থেকেও হেফাজত করেন।
মহান রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঝড়-তুফানের সময় এই দোয়াগুলো বেশি বেশি পাঠ করতেন— “আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা’অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের থেকে ফিরিয়ে নাও, আমাদের ওপর দিও না।’ (বুখারি)
এ ছাড়াও নবীজি এই দোয়াটিও পাঠ করতেন—‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস্আলুকা খায়রাহা ওয়া খায়রা মা ফিহা-ওয়া খায়রা মা উরসিলাতবিহি; ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উরসিলাতবিহি।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর মঙ্গল, এর মধ্যকার মঙ্গল ও যা নিয়ে তা প্রেরিত হয়েছে, তার মঙ্গল প্রার্থনা করছি এবং আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি এর অমঙ্গল হতে, এর মধ্যকার অমঙ্গল হতে এবং যা নিয়ে তা প্রেরিত হয়েছে, তার অমঙ্গল হতে।’
চারদিকে যখন প্রচণ্ড মেঘের গর্জন হবে তখন এই দোয়া পড়তে হবে। আব্দুল্লাহ ইবন যুবাইর (রা.) যখন মেঘের গর্জন শুনতেন তখন কোরআনুল কারিমের এ আয়াত তিলাওয়াত করতেন— ‘সুবহানাল্লাজি ইউসাব্বিহুর রা`দু বিহামদিহি ওয়াল মালাইকাতু মিন খিফাতিহি’অর্থ : ‘পাক-পবিত্র সেই মহান সত্তা—তার প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা, সভয়ে।’ (মুয়াত্তা)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেছেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেঘের গর্জন শুনলে বা বিদ্যুতের চমক দেখলে এই দোয়া করতেন— ‘আল্লাহুম্মা লা- তাক্বতুলনা- বিগজাবিকা ওয়া লা-তুলহিকনা- বিআ’জা-বিকা, ওয়া আ’-ফিনা- ক্বাব্লা জা-লিকা।’অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! তোমার ক্রোধের বশবর্তী হয়ে আমাদের মেরে ফেল না আর তোমার আজাব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করো না। বরং এর আগেই আমাদের ক্ষমা ও নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করে নিও।’ (তিরমিজি)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য়ও দোয়া করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন তখন এ দোয়া করতেন, “আল্লাহুম্মা লা-তাক্বতুলনা বিগাজাবিকা, ওয়া লা-তুহলিকনা বিআজা-বিকা; ওয়া আ-ফিনা-ক্বাবলা জা-লিকা।“
অর্থ : ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাকে আপনার গজব দিয়ে হত্যা করে দেবেন না এবং আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। এসবের আগেই আপনি আমাকে পরিত্রাণ দিন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৫০)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বজ্রপাতের শব্দ শুনলেই পাঠ করতেন, ‘সুবহানাল্লাজি ইয়ুসাব্বিহুর রা’অদু বিহামদিহি।’
ইবনে আবি জাকারিয়া থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি বজ্রের আওয়াজ শুনে এ দোয়া পড়বে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’, সে বজ্রে আঘাতপ্রাপ্ত হবে না।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২৯২১৩)