রোদ কিংবা বৃষ্টি—যখনই প্রকৃতির রূপ বদলায়, তখনই ছাতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজন হয়ে ওঠে। এটি শারীরিক সুরক্ষা দেয়। রোদ আর বৃষ্টিতে ভিজে নানা রোগ হওয়া থেকে রক্ষা করে। তাই রোদ-বৃষ্টির দিনে ছাতা হয়ে উঠে পরম বন্ধু।
ছাতার ব্যবহার অনেক পুরনো। প্রাচীন মিশর, চীন, ভারত এবং গ্রিসে ছাতার ব্যবহার দেখা যায়। ওই সময় শুধু সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা পেতেই ছাতার ব্যবহৃত হতো। যা ধনীদের মর্যাদার প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হতো। ধীরে ধীরে ছাতার ব্যবহার সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এক সময় তা বৃষ্টি থেকে বাঁচার মাধ্যম হয়ে ওঠে।
রোদে ছাতার ব্যবহার
গ্রীষ্মকালে রোদের তীব্রতা বাড়ে। সূর্যের তাপে হাঁটাহাঁটি করা প্রায় কষ্টকর হয়ে উঠে। তীব্র রোদে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, হিটস্ট্রোক হওয়ার শঙ্কা বাড়ে। এই সময় ছাতা ব্যবহার করলে সরাসরি সূর্যালোক শরীরে পড়ে না এবং শরীর অনেকটাই ঠান্ডা থাকে। ছাতা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও সুরক্ষা দেয়। এতে ত্বকের পোড়া দাগ, ট্যানিং এবং র্যাশের মতো সমস্যাও অনেকাংশে এড়ানো যায়।
বৃষ্টিতে ছাতার উপকারিতা
বর্ষাকালে ছাতা তো আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে ওঠে। এই সময় ছাতা ছাড়া বাইরে বের হলেই বিপদ। বৃষ্টিতে ভেজা জামাকাপড় থেকে , ঠান্ডা লাগা, জ্বর, এমনকি ফ্লু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ছোট একটি ছাতা ব্যাগে রাখা জরুরি। যা আমাদের হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে।
ছাতা মানেই নির্ভরতা
ভালো ছাতা শুধু বৃষ্টি বা রোদ থেকে নয়, অনেক সময় ধুলাবালি, ঝড় বা হালকা তুষারপাত থেকেও রক্ষা করে। কখনো কখনো ছাতার নিচে একসঙ্গে পথচলা হয়ে ওঠে স্মৃতিময়—বন্ধু, প্রেমিক-প্রেমিকা বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছাতার নিচে ভাগাভাগি করা মুহূর্তগুলো অনেক আবেগময় হয়ে ওঠে।
ছাতা ব্যবহারে শৈলী ও রুচি
বর্তমান সময়ে ছাতা শুধু ব্যবহারিক দিক থেকেই নয়, ফ্যাশনের ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। নানা রঙ, নকশা ও ডিজাইনের ছাতা এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ছোট, ভাঁজযোগ্য ছাতা থেকে শুরু করে বড় সাইজের, স্বচ্ছ বা কার্টুন প্রিন্টের ছাতা—সবই এখন জনপ্রিয়। মেয়েদের জন্য হালকা ফুলেল ডিজাইন, ছেলেদের জন্য গাঢ় রঙের ছাতা কিংবা শিশুদের জন্য কার্টুন প্রিন্টের রঙিন ছাতা—সবই এক একটি শৈল্পিক প্রকাশ।
পরিবেশ বান্ধব চিন্তাভাবনা
বর্তমানে প্লাস্টিকের বদলে পরিবেশবান্ধব উপাদানে তৈরি ছাতাও বাজারে আসছে। এগুলো যেমন টেকসই, তেমনি পরিবেশ রক্ষাতেও সহায়ক। এমন ছাতা ব্যবহার করে আমরা পরিবেশের দিকেও সচেতন হতে পারি।