শিশুর হাতেখড়ি হয় ছোটবেলা থেকেই। জন্মের পর পর্যায়ক্রমে বেড়ে উঠে একটি শিশু। হাত পা ছোড়, হামাগুড়ি, গুটি গুটি পায়ে হাটা এরপর দৌড়ানো। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সন্তানের এসব ক্রিয়া দেখে আনন্দিত হন অভিভাবকরা। তবে সন্তান যদি শিশু থাকতেই নিজের প্রতিভা দেখাতে শুরু করে, তবে তো আনন্দের সীমা থাকে না। সেই সন্তানকে নিয়ে গর্ব তো হবেই।
ঘানার বাসিন্দা ছোট্ট এস-লিয়ামের বাবা মায়ের অনুভূতি এখন এমনই। সন্তানকে নিয়ে গর্ববোধ করছেন তারা। কেনই বা নয়, মাত্র ১ বছর বয়সেই গিনেস ওয়াল্ড রেকর্ডে জায়গা করে নিয়েছে ছোট্ট লিয়াম। সে এখন বিশ্বের সবচেয়ে কনিষ্ঠ পুরুষ চিত্রশিল্পী।
গিনেস ওয়াল্ড রেকর্ডের তথ্য অনুসারে, লিয়ামের বয়স ১ বছর ১৫২ দিন। এস-লিয়াম নানা সাম আঙ্কারাহ এখন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ পুরুষ শিল্পী। সম্প্রতি গিনেস বুক অব রেকর্ডে তার নাম উঠেছে।
পারিবারিক সূত্রের বরাতে আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমের খবরে জানা যায়, লিয়াম মাত্র ৬ মাস বয়স থেকেই ছবি আঁকা শুরু করে। ওই সময় ছবি আঁকার প্রতি তার ইচ্ছা প্রকাশ পায়। লিয়াম তখন হামাগুড়ি দিতেও শেখেনি। লিয়ামের মা চ্যান্টেল একজন শিল্পী। তিনিই ছেলের এই কৌতুহল আর আবেগের দিকে খেয়াল করেন।
লিয়ামের মা জানান, লিয়াম খুব চঞ্চল প্রকৃতির। কখনোই এক জায়গায় স্থির রাখা যেত না তাকে। লিয়ামের মনোযোগ ধরে রাখতে ঘরের মেঝেতে একটি বড় ক্যানভাস দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে কিছু রং দেওয়া হয়। লিয়াম খেলার ছলে সেই ক্যানভাসে আঁকতে থাকে। অবাক করা বিষয় ছিল যে, সেই আঁকা ছবি দেখে মনে হতো না কোনো শিশুর করা। বরং তা দেখে মনে হতো কোনো শিল্পী রং ছড়িয়ে ক্যানভাসে কোনো গল্প ফুটিয়ে তুলেছে। এখান থেকেই শুরু হয় লিয়ামের পথচলা।
মাত্র ১ বছর বয়সেই অনেক ক্যানভাস রাঙিয়ে ফেলে লিয়াম। অল্পদিনের মধ্যেই ২০ টিরও বেশি পেইন্টিং ঘানার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরে প্রথম গ্রুপ প্রদর্শনী, দ্য সাউন্ডআউট প্রিমিয়াম প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। ১০টি পেন্টিং বিক্রির জন্য রাখা হয় এবং এর মধ্যে ৯টিই বিক্রি হয়ে যায়।
মা চ্যান্টেল আরও জানান, লিয়াম এখনও পুরোপুরি কথা বলে না। তবে রং নিয়ে খেলতে ভীষণ পছন্দ করে। লিয়ামের এই আগ্রহকে বরাবরই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তাই নিজের সেরাটা দিতে পারছে লিয়াম।
চ্যান্টেল অন্যান্য শিশুর অভিভাবকদের পরামর্শ দেন, তারাও যেন নিজের শিশুর মনের কথা এবং আগ্রহের বিষয়টি নজরে আনে। তাকে উত্সাহ দেয়। শিশুদের যে কাজই পছন্দ হবে তা যেন তাদের করতে দেওয়া হয়। এতে শিশুদের মানসিক বিকাশ ভালো হয়।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড অব রেকর্ড