‘কারো সুখ সুস্বাস্থ্যে, কারো মনে/প্রকৃত সুখ কোথায় জানে কজনে’। আসলে সুখের সংজ্ঞা কী? প্রকৃত সুখী হওয়ার ধরণগুলো কেমন? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে দ্বিধায় পড়তে হয়। কারণ একেক জনের সুখ একেক রকম। কেউ সুস্থ থাকাটাকেই সুখ মনে করেন। কেউ আবার মানসিক প্রশান্তিতে সুখ খুঁজে পান। কারো আবার সুখের তালিকা বিস্তর। কারণ তাদের চাহিদাও বিস্তর। সব চাহিদা মেটাতে পারলেই তারা সুখী হন। কিন্তু সবকিছুর মধ্যে প্রকৃত সুখ বা সত্যিই সুখী হওয়ার লক্ষণ কোনটি।
সুখ পরিমাপ করা যায় না। আবার কারো কাছে সুখী হতে কোনো কারণ লাগে না। অর্থসংকটে মাটির ঘরে থেকেও কেউ সুখ অনুভব করে। আবার কেউ প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হয়েও সুখী হন না। তাই সুখ পরিমাপ করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে সুখী হওয়ার কিছু লক্ষণ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। যা দেখে বোঝা যাবে আপনি সত্যিই সুখী।
বিজ্ঞানীরা জানান, ছোট কিছু বিষয় রয়েছে যা আপনাকে প্রতিনিয়ত সুখী করছে। অনেকেই হয়তো এসব বিষয় বুঝতেই পারেন না। তাই সুখী হয়েও প্রকৃত সুখ অনুভব করেন না। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন লক্ষণে বুঝবেন আপনি সত্যিই সুখী।
· দ্রুততার সঙ্গে সব কাজ করতে পছন্দ করেন? তবে সুখী আপনি অস্থির প্রকৃতির মানুষ। আর অস্থিরতা থাকলে সুখী হওয়া কষ্টকর। সুখী মানুষেরা ধীরে কাজ করেন। না বুঝে কোনো কাজ করেন না। সবকাজের পেছনে দৌড়ান না। তারা গুছিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। শান্ত থাকেন।
· সকালে দেরী করে ওঠা অসুখী মানুষের লক্ষণ। কারণ রাতের ঘুম না হলেই মানুষ সকালে দেরীতে ওঠেন। আর রাতের ঘুম না হওয়া অস্থিরতা, উদ্বেগ, বিষন্নতার লক্ষণ। তাই এসব থাকলে মানুষ সুখী হতে পারে না। যে মানুষগুলো সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেন তারাই সুখী। তাদের দুশ্চিন্তাও কম হয়।
· গবেষকরা সমীক্ষায় জানান, রাত জাগার প্রবণতা থাকলে তারা জীবন নিয়ে কম সন্তুষ্ট থাকেন। তারা মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন। তাই রাত জেগে থাকার অভ্যাস থাকলে বুঝতে হবে আপনি অসুখী।
· আপনজন পাশে থাকা মানে সুখী থাকার অন্যতম উপায়। বিশেষ করে যাদের বোন থাকে তারা সুখী হন। কারণ বোনের সঙ্গেই আবেগ ও মনের ভাব প্রকাশ করা যায় সহজেই। সমীক্ষায় দেখা যায়, ভাই বা বোন বেশি থাকলে তাদের মধ্যে সুখী হওয়ার প্রবণতাও বেশি থাকে। যেসব পুরুষের বোন রয়েছে তারা অন্য নারীদের সঙ্গেও ভালো যোগাযোগ রাখতে পারেন।
· বাড়ির সামনে, বারান্দায় কিংবা ছাদে বাগান করার শখ থাকলেও নিজেকে ভালো রাখা যায়। আর সুখী হওয়া যায়। শখের কাজ মানুষ ভালোবেসে করেন। তাই শখ সংরক্ষণ করে সুখী হওয়ার উপায় খুজে পাওয়া যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, মর্যাদাপূর্ণ ও ভালো বেতনের চাকরি করা ব্যক্তির চেয়ে গাছের যত্ন করা মালি বেশি সুখী। কারণ প্রকৃতির সংস্পর্শে তাদের মন ভালো থাকে। গবেষণার আরও জানা যায়, এইচআর, আইটি কর্মী ও ব্যাংকার ব্যক্তি সমাজের অন্যান্য পেশার মানুষের তুলনায় কম সুখী হন।
· সমীক্ষায় দেখা গেছে, দৈনিক প্রচুর ফল ও সবজি খেলে সুখী থাকা যায়। দৈনিক ফল খাওয়ার কারণে যে পরিমাণ সুখী হওয়া যায় তা নতুন চাকরি পাওয়ার সমান। তাই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার মধ্যেই সুখ লুকিয়ে থাকে।
সূত্র: ব্রাইট সাইড