জীবজগতে কত বৈচিত্র্যই না রয়েছে। একেক জীবের বৈশিষ্ট্য একেক রকম হয়। জীবনযাপনের তরিকাও থাকে ভিন্ন। সন্তান জন্ম দেওয়া, লালন পালন, বড় করা, সন্তানদের জন্য খাবার জোগানোর পন্থাও হয় ভিন্ন। সাধারণত স্তন্যপায়ী প্রাণী বা `ম্যামেল`-রা নিজেদের সন্তানদের স্তন্যপান করাতে পারে। কিন্তু পৃথিবীর বুকে এমনও প্রাণী রয়েছে যারা ম্যামেল না হয়েও নিজের সন্তানকে স্তন্যপান করাতে পারে। এইসব প্রাণীর পরিচয় জানেন কি?
জানলে অবাক হবেন, একটি বিশেষ মাছ রয়েছে যারা নিজেদের সন্তানকে স্তন্যপান সক্ষম। সেই মাছের নাম কী, জানেন? আশ্চর্যকর সেই মাছের নাম ডিসকাস। এই প্রজাতির মাছে নিজের বাচ্চাদের স্তন্যপান করায়। আমাজন নদেই দেখা মেলে এই মাছের। এদের ত্বক থেকে দুধের মতো একপ্রকার শ্লেষ্মা তৈরি হয়। যা নিজের বাচ্চাদের পান করায়।
এই প্রজাতির পুরুষ ও নারী উভয়ই এই স্লাইম বা শ্লেষ্মা উৎপন্ন করতে সক্ষম। এটি বেশ পুষ্টি সমৃদ্ধ হয়। যাতে উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। তাই সন্তান জন্মের পর প্রায় তিন সপ্তাহ পর্যন্ত নিজের বাচ্চাদের `দুধ` খাওয়ায় ডিসকাস মাছ।
এই তালিকায় আরও রয়েছে ‘এমপেরর পেনগুইন`-এর নাম। এই পেনগুইনের পুরুষ প্রজাতিরা পুরো শীতের মৌসুমে ডিমে তা দেয়। এরপর বাচ্চা ফুটলে তাদের দুধের মতো একপ্রকার স্নেহজাতীয় তরল খাওয়ায়। এই তরল পুরুষ পেনগুইনের গলা থেকে উৎপন্ন হয়। এই দুধকে বলা হয় `ক্রপ মিল্ক`। তবে স্তন্যপায়ীদের দুধের মতো এতে কার্বোহাইড্রেট থাকে না।
ফ্ল্যামিঙ্গো পাখিও নিজের সন্তানদের `ক্রপ মিল্ক` খাওয়াতে পারে। এই পাখি পুরুষ ও মহিলা উভয়ই দুধ উৎপন্ন করে। যাতে থাকে ক্যানথাস্যানথিন নামক উজ্জ্বল লাল-রং-এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। যার কারণে এই দুধের রং লাল হয়। এই দুধ খাওয়ার কারণেই ছোট ফ্ল্যামিঙ্গো সাদা থেকে গোলাপি রং- এর হয়ে ওঠে।
নিজের সন্তানদের স্তন্যপান করায় `জাম্পিং স্পাইডার`-ও। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই মাকড়সা দেখা যায়। এই মাকড়সার দুধে গরুর দুধের থেকে চারগুণ বেশি প্রোটিন থাকে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
শুধু তাই নয়, `গ্রেট হোয়াইট শার্ক`-এর শাবকেরাও মায়ের ইউটেরাসে বড় হয়। কিন্তু স্তন্যপায়ীদের মতো এদের আমবেলিক্যাল কর্ড থাকে না। তাই ইউটেরাসে থাকা শাবক ইউটেরাস থেকে উৎপন্ন একপ্রকার দুধ থেকে পুষ্টি নেয়।