শিশুর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল বাবা-মা। যেকোনো প্রতিকূলতা থেকেই বাবা-মা শিশুকে রক্ষা করে। নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ায়। সন্তানের খাদ্যের যোগান দিতে ছুটে বেড়ায়। কিন্তু সেই বাবা মা যদি সন্তান জন্মের পরপরই তাকে ভোক্ষণ করে! রক্ষকই যখন ভক্ষক হয়, তবে এরচেয়ে আর নির্মম কিছুই হতে পারে না। বিশ্বের বুকে এমনই ঘটনা ঘটে। এমন কিছু প্রাণী আছে, যারা নিজের সন্তানকে জন্মের পরপরই হত্যা করে। এই বৈশিষ্ট্য অনেক প্রাণীর মধ্যেই রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, নিজের সন্তানকে খেয়ে ফেলা বা হত্যার পিছনে কয়েকটি কারণ থাকে। কিছু প্রাণী খাদ্যের অভাবে ঘাতক হয়ে ওঠে। আবার কিছু প্রাণী সন্তানের ভালোর জন্য এমন কাজ করে।
এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে হ্যামস্টার। এই প্রাণী কখনও কখনও বাচ্চা জন্ম দিয়েই মেরে ফেলে। এরপর বাচ্চাগুলোকে খেয়ে ফেলে। সে মনে করে তার বাচ্চাকে অন্য প্রাণীরা খেয়ে ফেলবে। সে তখন মানসিক চাপে থাকে। পরিবেশ তার বাচ্চাদের অনুকূলে থাকবে না মনে করেই তাদেরকে হত্যা করে। এছাড়া সন্তান জন্মের পর মা হ্যামস্টারের শরীরে অনেক ভিটামিন এবং খনিজের অভাব দেখা দেয়। সেই অভাব দূর করতেও তারা নিজের সন্তানকে খেয়ে ফেলে।
মেরু অঞ্চলের প্রাণী পোলার বিয়ারও এই কাজ করে। এরা ছোট প্রাণী শিকার করে থায়। এমনকি নিজের সন্তানকে জন্ম দেওয়ার পরই মেরে খেয়ে ফেলে। তারা অনেকবেশি ক্ষুধার্ধ থাকে। নিজের ক্ষুধা মেটাতেই এমনটা করে।
তৃণভোজী প্রাণী জলহস্তীও নিজের সন্তানকে হত্যা করে। তারা বাচ্চাকে খেয়ে ফেলে না। তবে হত্যা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু কিছু পুরুষ জলহস্তী মাংসাশী হয়। যারা এমন আচরণ করে। বিশেষ করে, ছেলে সন্তান জন্মালেই তাকে হত্যা করে। কারণ তারা নিজের ছেলেকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবে। তাই ছেলে সন্তান জন্ম নিলেই বাবা জলহস্তী হত্যা করে ফেলে।
বাড়ির চারপাশে ঘুরে বেড়ানো ইঁদুরও কিন্তু নিজের বাচ্চাদের মেরে ফেলে। তারা বাচ্চাদের খেয়ে নেয়। বিশেষ করে নিজের সন্তানদের মধ্যে কোনো ধরনের শারীরিক ঘাটতি লক্ষ্য করলেই এমনটা করে।
এদিকে কাঁকড়াও এই তালিকায় রয়েছে। স্ত্রী কাঁকড়া একসঙ্গে ১০০টি বাচ্চা জন্ম দেয়। এরপর তারা ক্ষুধার্ত হলে নিজের বাচ্চাকেই খেতে শুরু করে। বিশ্বের বুকে এমন হিংস্র প্রাণীরাই বাচ্চাদের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম নয়। নিজেরাই ভক্ষণ করে বাচ্চাদের প্রাণহানি করে।