চাকরিক্ষেত্রে ছেলেদের থেকে পিছিয়ে নেই মেয়েরা। দিন যত যাচ্ছে, তাদের স্বনির্ভরতার হার তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা সমাজের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দিক। তবে কিছু পরিস্থিতিতে পেশা আর সংসার বেছে নিতে হলে মেয়েরা সংসারকেই কাছে টেনে নেন।
সম্প্রতি একটি আলোচনায় এমনটিই জানিয়েছেন স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান অরুন্ধতী।
অরুন্ধতীর মতে, জীবনে তিনটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে মেয়েরা তাদের পেশাগত প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে গিয়ে ব্যক্তিজীবনকে অগ্রাধিকার দেন।
১. মা হওয়ার পর চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবেন অনেকেই। সন্তানকে ছোট থেকে বড় করে তোলার দায়িত্ব বাবা-মা দুজনের হলেও, সন্তানকে বুক দিয়ে আগলে রাখতে চান মা। সন্তানকে কাছের মানুষের দায়িত্বে রাখতেও অনেক সময়ে ভরসা পান না মায়েরা। তাই নিজের ক্যারিয়ারের কথা না ভেবে, আর্থিক স্বাধীনতায় জলাঞ্জলি দিয়ে সন্তানকে বড় করে তুলতে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
২. সন্তান যখন জীবনের প্রথম বোর্ডের পরীক্ষা দিতে যায়। তা নিয়ে ছেলেমেয়েরা যতটা না ভয়ে থাকে, তার চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন মায়েরা। সন্তানের পাশে প্রতি মুহূর্তে থাকার জন্য আকুল হয়ে পড়েন। কর্মক্ষেত্রেও মন পড়ে থাকে ছেলেমেয়ের পড়াশোনায়। সন্তানের পড়াশোনায় প্রতি মুহূর্তে সাহায্য করতে না পারার আক্ষেপও তৈরি হয়। তাই এই দোটানা থেকে নিজেদের বের করে আনতে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সন্তানের পরীক্ষা, পড়াশোনা তখন সবচেয়ে বড় হয়ে ওঠে।
৩. বাবা-মা কিংবা শ্বশুর-শাশুড়ি অসুস্থ হয়ে পড়লে চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন মেয়েরা। বয়স হলে কাছের মানুষের প্রতি নির্ভরযোগ্যতা অনেক বেড়ে যায়। ছেলেমেয়েদেরও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ব বেড়ে যায়। নার্স কিংবা পেশাদার কোনো তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে অসুস্থ, বৃদ্ধ বাবা-মাকে রাখলে মনের মধ্যে একটা অস্বস্তি চলতেই থাকে। নিজেদের দোষী মনে হয়। এই রকম পরিস্থিতিতে তাই নারীরাই নিজেদের কেরিয়ারের কথা দুবার না ভেবে কাছের মানুষগুলোর জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে দেন। বাড়ির বয়স্কদের দেখাশোনার দায়িত্ব তুলে নেন নিজের কাঁধে।
সূত্র : আনন্দবাজার (অনলাইন)