আমার সবাই জানি ১৮ বছর হলেই একজন মানুষকে প্রাপ্তবয়স্ক বলা যায়। কিন্তু তার আগে নয়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশের নাগরিকেরা ১৮ বছর পূর্ণ হলে ভোটাধিকার পেয়ে থাকেন। অন্যদিকে ১৮ বছর বয়স হলেই শারীরিকভাবে পরিণত হন যুবক-যুবতীরা। শরীর প্রাপ্তবয়স্ক হলেও মস্তিষ্কক সেই জায়গায় পৌঁছাতে গেলে অপেক্ষা করতে হয় আরও ১২ বছর।
এমন তথ্যই প্রকাশ করেছে সাম্প্রতিক গবেষণা। স্নায়ুবিজ্ঞানীরা বলছেন, মনের সঙ্গে শরীরের পরিবর্তন না এলে বয়স বাড়লেও তাকে প্রাপ্তবয়স্ক বলে ধরে নেওয়া যায় না। এই পরিবর্তনের নেপথ্যে রয়েছে মস্তিষ্ক।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পিটার জোনস এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, শৈশব থেকে কৈশোরের পথে পা দেওয়ার এই যাত্রাপথ খুবই কঠিন, যা ধারণার বাইরে। তার মতে, “শারীরিক ও মানসিকভাবে এত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যে জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় এই সময়টাতেই। আবার সবারই যে ঠিক এই বয়সেই পরিবর্তন আসে বা আসবে, এমনও নয়।”
এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে ১৪-২৪ বছর বয়সী প্রায় ৩০০ জন যুবক-যুবতীর ওপর একটি সমীক্ষা করা হয়। প্রত্যেকের মস্তিষ্কের এমআরআই স্ক্যান করার পর গবেষকেরা দেখেন, ১৮ বছর বয়সের পরেও তাদের অনেকেরই মস্তিষ্কের গঠনে পরিবর্তন আসছে। যার প্রভাব শরীরে ও মনের ওপর পড়ে।
তাই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেছেন ভেবে যদি কেউ বিয়ের মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন, পরবর্তীকালে সমস্যা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। আবার সমাজ, সামাজিক পরিকাঠামো সম্পর্কে কোনো ধারণা না রেখেই নির্বাচনে অংশ নেওয়াও উচিত নয়। আবেগ নিয়ন্ত্রণ, আচরণ এবং ব্যবহারিক পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স অন্তত পক্ষে ২৫ হওয়াটাই শ্রেয় বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।