খাওয়ার পরপরই ঘুমের অভ্যাস অনেকেরই থাকে। বিশেষ করে দুপুরের খাবারের পর ঝিমুনি হয়। ঘুম ঘুম ভাব হয়। ইচ্ছে হয় একটু বিছানা গা এলিয়ে দিতে। কিন্তু অফিসে বা কর্মস্থলে থাকলে তো ঘুমের উপায় নেই। বরং ঘুম যেন না পায় সেই উপায় বের করতে হয়। ঘুম শরীরকে সতেজ থাকতে সাহায্য করে। কিন্তু সব জায়গা তো ঘুমের পরিবেশ থাকে না। তাই খাওয়ার পর যেন ঘুমকে বিতারিত করা এর জন্য় কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। খাওয়ার পর ঘুম পাওয়ার সাধারণ কারণ রয়েছে। যেমন খাবারের ধরন, পরিমাণ এবং জীবনযাপনের অভ্যাস। তবে কিছু পদক্ষেপে অসময়ের এই ঘুমকে তাড়ানো যাবে।
হালকা হাঁটাহাঁটি করুন
খাওয়ার পরেই ঘুম এড়াতে হালকা হাঁটাহাঁটি করুন। বার খাওয়ার পর ১০-১৫ মিনিটের জন্য হাঁটাহাঁটি করলে শরীরের বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত হয় এবং হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। এটি মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাড়ায়। যা আপনাকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
খাওয়ার কিছুক্ষণ পর এক গ্লাস পানি পান করুন। এটি শরীরকে হাইড্রেট রাখে। ঘুমের ভাব কমাতে সহায়তা করে। পানি পান করলে শরীর আরও সজাগ থাকে এবং এটি খাবার হজমেও সহায়ক।
চা বা কফি পান
যদি বেশি ঘুম পেয়ে যায়, তবে সামান্য পরিমাণে চা বা কফি পান করুন। এই পানীয়গুলোতে থাকা ক্যাফেইন স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে এবং ঘুমকে বাধাগ্রস্ত করে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, অতিরিক্ত চা বা কফি পান করলে তা স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে রাতে ঘুমের সময় এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে।
হালকা কাজ করুন
খাওয়ার পর নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। কাজ নিয়ে থাকুন। আপনার মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে রাখলে ঘুমের ভাব দূর হয়ে যাবে।
শ্বাসের ব্যায়াম
গভীর শ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। যা আপনার মস্তিষ্কে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় এবং আপনাকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। পাঁচ থেকে দশ মিনিট গভীর শ্বাস নিন এবং ছাড়ুন। এটি শুধু ঘুম দূর করতে সাহায্য করে না, বরং মানসিক চাপও কমিয়ে দেবে।
খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন
অতিরিক্ত খাবার খেলে ঘুম পায়। অতিরিক্ত খাবার হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয় এবং শরীরকে বিশ্রাম নেওয়ার ইঙ্গিত দেয়। তাই খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ। পরিমিত খাবার গ্রহণ করলে শরীর ভারী অনুভব করবে না। ঘুমের প্রবণতাও কম থাকবে।
পর্যাপ্ত আলোতে থাকুন
খাওয়ার পর ঘুমের প্রবণতা কমাতে পর্যাপ্ত আলোতে থাকুন। উজ্জ্বল আলো আপনার শরীরের জৈবিক ঘড়িকে প্রভাবিত করে এবং আপনাকে জাগ্রত থাকতে সাহায্য করে।
চিনি এবং কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
যে খাবারগুলোতে চিনি বা সহজে হজমযোগ্য কার্বোহাইড্রেট (জটিল কার্বোহাইড্রেটের বিপরীতে) বেশি থাকে, সেগুলো খাওয়ার পর শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ দ্রুত কমে যায়। যা আপনাকে ক্লান্ত বা ঘুমঘুম অনুভব করতে বাধ্য করে। তাই চিনি এবং সহজ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং সারাদিন সতেজ অনুভব করবেন। ব্যায়াম আপনার মেটাবলিজমকে ত্বরান্বিত করে এবং ঘুমের প্রবণতা কমিয়ে দেয়। তবে খেয়াল রাখবেন, খাবারের পরপরই ভারী ব্যায়াম না করা ভালো। কারণ এটি হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ
আপনার খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি রাখুন। এ ধরনের খাবার ধীরে ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি প্রদান করে। যা ঘুমের প্রবণতা কমাতে সহায়তা করে।