খ্রিস্টান ধর্মাম্বলীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন। বিশ্বজুড়ে আলোকসজ্জায় নানা আয়োজনে উৎসবটি পালিত হচ্ছে। সান্তাক্লজ, ক্রিসমাস ট্রি সেজে উঠেছে সব গীর্জায়। প্রার্থনা শেষে দিনের শুরুতেই 'মেরি ক্রিসমাস' বলে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খ্রিস্টান ধর্মাম্বলীরা। 'বড়দিন'এর শুভেচ্ছো বিনিময়ে মেরি ক্রিসমাস বলার পাশাপাশি 'এক্স-মাস'ও বলা হয়। যদি কেউ ‘হ্যাপি ক্রিসমাস’ বলেও বসেন, তবে অন্যরা ভুল ধরিয়ে বলেন, ‘হ্যাপি নয়, মেরি ক্রিসমাস।’ এই সম্বোধনটা কেন করা হয় তা জানেন?
ইংল্যান্ডে ব্যাপকভাবেই ক্রিসমাসের আগে ‘হ্যাপি’ই বসানো হয়। ব্রিটেনের রানি নিজেও বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাতে ‘হ্যাপি ক্রিসমাস’ বলেন। রানির মতে, ‘মেরি’টা যথেষ্ট পরিমাণে ভদ্র শব্দ নয়।'
শুধু তাই নয়, ইংল্যান্ডের কিছু স্বঘোষিত সম্ভ্রান্ত পরিবার এখনও ‘মেরি’ শব্দটা ব্যবহার করে না। তাদের মতে, এটা একেবারে অসভ্য গুণ্ডাদের ভাষা। ‘হ্যাপি’ শব্দটি বেশি আন্তরিক ও উপযুক্ত। সে দেশের অনেক চার্চেও সেই রীতি এখনও চলমান।
তবে ‘মেরি ক্রিসমাস’-বলে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পিছনেও রয়েছে ইংল্যান্ডের চার্চ। সাধারণ মানুষের মধ্যে খ্রিস্টধর্মকে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই পাদ্রিদের উদ্যোগে ‘হ্যাপি’র বদলে ক্রিসমাসের আগে ‘মেরি’ বসানো হয়। সেই থেকেই ‘মেরি ক্রিসমাস’ কথাটিই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে।
১৫৩৪ সালে বিশপ জন ফিশার চিঠি লিখেছিলেন ক্রোমওয়েলকে। সেই চিঠিতে জন ফিশার ‘মেরি ক্রিসমাস’ লিখেই সম্বোধন করেছেন।
বলা যায়, সাধারণ মানুষের শুভেচ্ছা বিনিময়ে ভাষা হচ্ছে 'মেরি ক্রিসমাস'। অন্যদিকে রক্ষণশীলদের ক্রিসমাস শুভেচ্ছা বিনিময়ের ভাষা হচ্ছে ‘হ্যাপি ক্রিসমাস’। বিশ্বজুড়ে এমন চিত্র খুব কম দেখা গেলেও ইংল্যান্ডের রীতিতে এই প্রথাই চলছে।
উনিশ শতকের গোড়া থেকে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ‘মেরি ক্রিসমাস’ই শুভেচ্ছাবার্তা হিসাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ক্রিসমাস-কার্ডেও এই কথাটিই ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়। যা এখন বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মাম্বলীদের কাছে প্রধান শুভেচ্ছাবার্তা হয়ে উঠেছে।
সূত্র: দ্য স্টার