• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘শিস...শিসস...’ শব্দে শিশু প্রস্রাব কেন করে?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২২, ১২:২০ পিএম
‘শিস...শিসস...’ শব্দে শিশু প্রস্রাব কেন করে?

ছোট্টবেলা থেকেই শিশুদের নানাকিছু অভ্যাস করাতে হয়। খাওয়া, ঘুম, প্রস্রাব, পায়খানা সবকিছুর অভ্যাস করাতে হয় ধীরে ধীরে। গুনগুন গান শুনিয়ে ঘুম পাড়ানো, সময়মতো প্রস্রাব করানো এমন অনেক অভ্যাসই ছোটবেলা থেকেই করানো হয়।

ছোটবেলায় শিশুকে প্রস্রাব করানোর সময় ‘শিসস..শিসস’ শব্দ করা হয়। যে শব্দ শুনেই শিশুও অনায়াসে প্রস্রাব করে। কখনও ভেবেছেন এই শব্দ শুনে কেন শিশুদের প্রস্রাবের বেগ আসে? 

বিশ্বজুড়েই এই কৌশলটি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এর কার্যকারিতার পেছনের কারণ সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। কৌতুহল থেকেই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন রাশিয়ান বিজ্ঞানী ইভান পাভলভ। তিনি কুকুরের উপর এই কৌশল পরীক্ষা করেছেন। 

মাংসের টুকরো খেতে কুকুরের মুখের ভেতর প্রচুর লালা তৈরি হয়। পালভল তার পরীক্ষায়, এক ঘণ্টা আগে আওয়াজ বাজাতেন এরপর কুকুরকে মাংস খাওয়াতেন। বেশ কয়েকবার এই কৌশলে তিনি কাজটি করেন। পরে দেখা যায়, কুকুরটি যখনই ঘণ্টার আওয়াজ শোনে তার মুখ দিয়ে লালা বের হয়। পাত্রে মাংস না থাকলেও কুকুরের মুখ দিয়ে লালা ঝরতো। স্নায়ুতন্ত্র অবচেতনভাবে সাড়া দেয় বলেই এমনটা ঘটে। 

পরীক্ষা শেষে বিজ্ঞানীয় পালভল জানান, স্নায়ুতন্ত্র অবচেতনভাবে সাড়া দেয় বলেই কুকুর প্রতিক্রিয়া জানায়। আবার বাহ্যিক কোনো উদ্দীপনার মাধ্যমেও এমনটা হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন। অভিভাবকরা ঠিক একই কাজটি করেন। ‘শিসস...শিসস...’ শব্দটি উচ্চারণ করলেই শিশুটির প্রস্রাব করতে হবে। এটি স্নায়ুতন্ত্রের অবচেতন মনেরই সাড়া। শব্দটি শুনলে  শিশুর মস্তিষ্ক ওই শব্দ এবং প্রস্রাবের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করতে পারে। তখনই শিশুরা প্রতিবর্তী ক্রিয়া আরম্ভ করে এবং প্রস্রাব করে। 

এই পরীক্ষায় বিজ্ঞানীয় আরও জানান, শব্দের মাধ্যমে প্রস্রাবের বিষয়টি শুধু শিশুদের ক্ষেত্রেই হয় না। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষরাও বহিরাগত উদ্দীপনার মাধ্যমে সাড়া দিতে পারে। অন্য কাউকে প্রস্রাব করতে দেখলে কিংবা পানির শব্দ শুনলে কিছু মানুষের প্রস্রাবের বেগ আসতে পারে।

দেশের বাবা-মায়েরা শিশুদেরকে শব্দের মাধ্যমে প্রস্রাব করার এমন অভ্যাস করান। পরে দেখা যায়, একটি সময় শিশুরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রস্রাব করতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। 

শুধু দেশে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই রীতি রয়েছেন। ভিয়েতনামে বাবা-মায়েরা এই কৌশল অবলম্বন করেন। তারা শব্দের মাধ্যমে শিশুকে এই অভ্যাস করান। যার ফলে সেখানকার শিশুরা  ৯ মাস বয়সের পরে আর ডায়াপার ব্যবহার করে না। 

গবেষক জানান, শিশুকে এই অভ্যাস করালে বাবা-মায়ের জীবন অনেক সহজ হয়। অল্প বয়স শিশুরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রশিক্ষিত হয় এবং মূত্রাশয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাছাড়া যথাসময়ে মূত্রাশয়ের অভ্যাস করলে শিশুর নানা সংক্রমণের ঝুঁকিও কমে।

Link copied!