বিংশ শতাব্দীতে সময়ের গতিতে অনেকটা এগিয়ে গেছে বিশ্ব। ২০২১ পেরিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বছর ২০২২ সাল। বিশ্বজুড়ে নতুন বছরকে স্বাগতও জানানো হয়েছে। তবে এর মধ্যে একটি দেশ রয়েছে, যেখানে সময়ের গতি এখনো পিছিয়ে। মানে যে দেশ এখনো ২০১৩ সালেই আটকে রয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম এই বিচিত্র দেশটি হচ্ছে ইথিওপিয়া। উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। দেশটির পূর্ণ নাম ইথিওপিয়া যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। পৃথিবীর দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণতম স্থান এটি। আফ্রিকার এই দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেও পরিপূর্ণ। দেশটি ‘আফ্রিকার শিং’ তথা সোমালি উপদ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত। ইথিওপিয়ার উত্তর সীমান্তে রয়েছে ইরিত্রিয়া, উত্তর-পূর্বে রয়েছে জিবুতি, পূর্বে সোমালিয়া, দক্ষিণে কেনিয়া, পশ্চিমে দক্ষিণ সুদান এবং উত্তর-পশ্চিম সীমানায় অবস্থান সুদানের।
বিচিত্র ক্যালেন্ডারের জন্য় আলোচনায় উঠে এসেছে দেশটি। সেখানে বছর পূর্ণ হয় ১২ মাসের বদলে ১৩ মাসে। মানে ১৩ মাস পর পর নতুন বছর আসে দেশটিতে। এই কারণেই বিশ্বের প্রচলিত ক্যালেন্ডার থেকে প্রায় ৯ মাস পিছিয়ে রয়েছে ইথিওপিয়ার ক্যালেন্ডার।
মর্নিং এক্সপ্রেস প্রতিবেদনে জানা যায়, গ্রিক ভাষায় ‘প্যাগিউম’ বা ইংরেজিতে ‘ফরগটেন ডেজ’ নিয়ে ইথিওপিয়ান ক্যালেন্ডারে একটি মাস তৈরি হয়। সেই অনুযায়ী ১৩ মাসেই হয় এক বছর।
জুলিয়ান ক্যালেন্ডার দিয়েই চলত পুরো বিশ্ব। এরপরই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের আবির্ভাব। কিন্তু নতুন ক্যালেন্ডারে আপত্তি জানায় বিশ্বের কয়েকটি দেশ। ইথিওপিয়াও ওই দেশগুলোর মধ্যে একটি। তাই জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারেই ইথিওপিয়ার অর্থোডক্স টিওয়াহেদো চার্চের ক্যালেন্ডারের মিল রাখা হয়। সেই অনুযায়ী বছর গণনা করে দেশটি।
এই দেশটিতে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত স্থানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আরও রয়েছে বিশ্বের গভীরতম এবং দীর্ঘতম গুহা। তবে ৯ বছরের বিশাল পার্থক্যের কারণে বিব্রত হতে হয় পর্যটকদের। যারা দেশটিতে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যেতে চান, তারা হোটেল বুকিংসহ অন্যান্য বিষয়ে বেশ ঝামেলা পোহান। কারণ, ২০২২ সালে এসে ২০১৩ সালের সময়ের হিসাব মেলানো সত্যিই বিব্রতকর!