• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সন্তান কেন ‘দুষ্টু’ হচ্ছে?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২১, ০৩:২৩ পিএম
সন্তান কেন ‘দুষ্টু’ হচ্ছে?

সন্তানরা বাড়িতে দুষ্টুমি করছে, মা বলছেন, “বাবা বাড়ি এলে তোমার বিচার করবে ‘ সারা দিনে বহুবার এটা বলে সন্তানকে ভয় দেখাচ্ছেন। কিন্তু কখনো ভেবেছেন কেন সন্তান এমন আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। কেন অবাধ্য হচ্ছে, কেন আগ্রাসী আচরণ করছে?

বাবা সারা দিন বাইরে কাজে থাকেন। সারা দিন শেষে সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাবেন। সে সময়টা যদি বাবার শাসনের ভয়ে সন্তানরা দূরে থাকে, তবে তাদের মানসিকভাবে কেমন প্রভাব হবে, তা কখনো চিন্তা করেছেন।  

মায়েরা কাজের পাশাপাশি দুষ্ট সন্তানদের সামলে নিতে এমন ভয় দেখান। কিন্তু সন্তানের সঙ্গে বাবার দূরত্ব হচ্ছে এই কথাতেই। বাবা যখন বাড়ি ফিরে সন্তানদের আদর করতে চান তখন তারা আতঙ্কিত থাকে। হয়তো-বা একসময় এই ভয়গুলোও কেটে যায়। সন্তানরা তখন আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে।

কী করা যায়? কীভাবে সন্তানের আগ্রাসী আচরণকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, ভেবে দেখেছেন? না ভেবে থাকলে এখনই ভাবুন। কারণ ছোট থেকেই এই আচরণ নিয়ন্ত্রণ না করলে পরবর্তী সময়ে তা অন্য রূপ নিতে পারে।

বাবা যখন বাড়ি থেকে বের হোন তখনই আপনার ছোট বাচ্চাটা আক্রমণাত্মক, দুষ্টু ও অবাধ্য হচ্ছে। এর কারণ কী, তা আগে খুঁজে নিন। প্রথমে তাদের আচরণে নজর রাখুন। উচ্চস্বরে ধমক দিলে সন্তানরা ভাববে তাদের তিরস্কার করা হচ্ছে। বাবার ভয় দেখালে বুঝবে তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই ভাবনাটা যেন কোনোভাবেই সন্তানের মনে না আসে খেয়াল রাখুন। এতে তারা আরও আগ্রাসী হয়ে উঠবে।

দুষ্ট বা অবাধ্য সন্তানকে নিয়ে বাবা-মায়ের চিন্তা একটু বেশিই থাকে। এ ক্ষেত্রে সন্তানকে লালনপালনের বিষয়গুলো উন্নত করুন। সন্তানের আক্রমণাত্মক আচরণ নিয়ন্ত্রণে সুবিধে হবে।

বাবা-মায়ের উচিত সর্বদা সন্তানদের সঙ্গে বিনীত হয়ে কথা বলা। বাবার অনুপস্থিতিতে বাচ্চারা কোনো ভুল করলেও বিনয়ের সঙ্গে বুঝিয়ে বলুন। এই সময় বাবার ভয় না দেখিয়ে মায়েদের উচিত সন্তানের সঙ্গে বিনয়ী হয়ে খারাপ-ভালো দিকগুলো দেখিয়ে দেওয়া।

এদিকে বাবারা সন্তানদের সামনে মাকে বকে দিচ্ছেন। এতে সন্তান মায়ের আরও অবাধ্য হয়ে উঠবে। মায়ের কঠোরতা আর বাবা দয়ার মাঝে ভারসাম্য করতে গেলে সন্তানদের আচরণে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

জেনে রাখুন, বাচ্চাদের অতিরিক্ত প্রশ্রয় দেওয়া কিংবা ভয় দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা দুটোই কিন্তু আচরণকে জটিল করে তুলবে।

সন্তানদের কঠোর শাস্তি ও হুমকি দেওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন। বরং তাদের শখ থেকে দূরে রাখতে পারেন। যেমন বলতে পারেন, “আমরা আজ ফুটবল খেলবে না, কারণ তুমি আমার অনুপস্থিতিতে ভালো সন্তান হওনি। আর দুষ্টুমি করেছ।” এতেই সে বুঝে যাবে তার আচরণ খারাপ ছিল।

মায়েরা কাজের ফাঁকে সন্তানকে সময় দিন। তাদের সঙ্গে খেলায় সময় দিন। মজার বিষয় নিয়ে কথা বলুন। পর্যাপ্ত সময় দিন সন্তানকে। খাওয়া-দাওয়া একসঙ্গে করুন। উপদেশমূলক কথা, যেকোনো নির্দেশনা সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন। হঠাৎ কিছু চাপিয়ে না দিয়ে তাদের সময় দিন।

মনে রাখবেন, বাবা-মা সন্তানের আদর্শ। যেকোনো মিথ্যা ‘ভয়’ সন্তানদের ছোট্ট ‘দেবদূত’ থেকে ‘আগ্রাসী’ করে তুলবে। তাই ভয় না দেখিয়ে, একটু বুদ্ধি করে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করুন।

Link copied!