শীত শেষ। সেই সঙ্গে শেষ হচ্ছে শীতের সবজিও। যদিও এখন সারাবছরই সব সবজি বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু অন্য সময় ফলন কম হওয়ায় দামও খুব চড়া থাকে। মটরশুঁটি, গাজর, টমেটো এসব সবজি শীতেই বেশি ফলন হয়। তাই শীতের সময়ই এগুলোর দাম নাগালের মধ্যে থাকে। অনেকেই কম দামে পেয়ে এসব সবজি ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখেন। সংরক্ষণ করে রাখা এসব সবজি দিয়ে রান্না করেন। কিন্তু অনেকে আবার সংরক্ষণের সঠিক উপায় জানেন না। তাদেরকে শীতের সময় আসা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়। নয়তো চড়া দামে কিনে খেতে হয়।
শীতের সবজি সংরক্ষণের সহজ ও সঠিক পদ্ধতি জানাবো এই আয়োজনে। সারাবছরই যা রান্না করে খাওয়া যাবে সহজে।
মটরশুটি
মটরশুটি সংরক্ষণের জন্য প্রথমে খোসা ছাড়িয়ে দানাগুলো বের করে নিন। এরপর একটি পাত্রে চুলায় পানি বসান। পানিতে ১ টেবিল চামচ চিনি দিন। ২ কেজি মটরশুঁটির জন্য ১ টেবিল চামচ চিনি। আপনারা সংরক্ষণের পরিমাণের উপর চিনি কমবেশি করে নিতে পারেন। এবার পানি ফুটে এলে আঁচ কমিয়ে মটরশুঁটি দিয়ে দিন। পাত্রটি ঢেকে দিন। ২ মিনিট পর্যন্ত চুলায় রাখুন। মটরশুঁটি পানিতে ভেসে উঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ভেসে উঠলেই পানি ঝরিয়ে নিন মটরশুটি তুলে নিন।
এবার মটরশুটিগুলো ফ্রিজের ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে দিন। ঠান্ডা পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে নিন। এবার পানি ঝরিয়ে ফ্যানের নিচে রাখুন। কিছুক্ষণ পর মটরশুটি ছোট পলিথিন ব্যাগ অথবা জিপলক ব্যাগে ভরে ডিপ ফ্রিজে রাখুন। এটি এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ থাকবে। এখান থেকে আপনি যেকোনো রান্নায় মটরশুটি ব্যবহার করতে পারবেন।
গাজর
গাজরও দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যাবে। প্রথমে গাজরের খোসা ছাড়িয়ে দুই-একবার ধুয়ে নিন। এরপর এটি প্লাস্টিকের পাত্রে পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। গাজর পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় থাকতে হবে। পাত্রের ঢাকনা আটকে তা ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করুন। দুইদিন পর পর সেই পানি পরিবর্তন করে নিন। গাজর এই অবস্থায় ৮ থেকে ১০ দিন ভালো থাকবে।
সারাবছর গাজর সংরক্ষণের জন্য প্রথমে পছন্দমতো টুকরো করে নিন। চুলায় বড় হাঁড়িতে পানি ফুটিয়ে নিন। পানি ভালোভাবে ফুটে উঠলে গাজর দিয়ে দিন। দুই মিনিট সেদ্ধ করুন। এরপর গাজর থেকে গরম পানি ঝরিয়ে বরফ ঠান্ডা পানিতে দিন। কিছুক্ষণ রেখে পানি ঝরিয়ে ফেলুন। এরপর বাতাসে শুকিয়ে ফেলুন। এবার এটি পলিথিনে বা বায়ুরোধী কোনো বক্সে রেখে ডপি ফ্রিজে তুলে রাখুন।
ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ব্রকলি
ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি সংরক্ষণ করা যাবে সারাবছরের জন্য। এগুলো একটু বড় বড় করে কাটতে হবে। এরপর গরম পানিতে ভাপ দিয়ে নিতে হবে। পানি ঝরিয়ে প্লাস্টিকের ব্যাগে সংরক্ষণ করা যাবে। এগুলো বেশি সেদ্ধ করা যাবে না। পানিও পুরোপুরি শুকিয়ে নিতে হবে। এগুলো ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।
শিমের বিচি
শিমের বিচির খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। চুলোয় ফুটন্ত গরম পানিতে এক টেবিল চামচ চিনি দিন। এতে সবজির রংঠিক থাকবে। দুই মিনিট সেদ্ধ করুন। এরপর ঠান্ডা পানিতে দিয়ে ধুয়ে নিন। পানি ঝরিয়ে ভালোভাবে শুকিয়ে পাত্রে ভরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।
টমেটো
টমেটোর পিউরি বানিয়ে সংরক্ষণ করতে পারেন। টমেটো ভালোভাবে ধুয়ে, টিস্যু দিয়ে মুছে নিন। টমেমো চার ফালি করে কেটে চুলোয় জ্বাল কমিয়ে সেদ্ধ করে নিন। সেদ্ধ টমেটো চালনিতে চেলে অথবা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। এটি পিউরি বানিয়ে ছোট ছোট বাটিতে করে ফ্রিজে রাখুন। এছাড়া টমেটো আস্তই ডিপ ফ্রিজে রেখে বরফ করে সংরক্ষণ করতে পারেন।
ধনেপাতা
তাজা ধনেপাতা ভালোভাবে ধুয়ে কাটুন। এবার এগুলো বাতাসে ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। বক্সে ভরে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। এগুলো বেশিদিন ফ্রিজে সংরক্ষণ না করাই ভালো।