• ঢাকা
  • সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২, ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

পানির নিচে গান পরিবেশন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২১, ০১:১৬ পিএম
পানির নিচে গান পরিবেশন

ভ্রমণপ্রেমীরা সমুদ্রের অতলে গভীরে গিয়ে ঘুরে বেড়ান। সেখানে থাকা জীববৈচিত্র্যের নানা রূপ তাদের মুগ্ধ করে। সমুদ্রের পানির নিচে ঘুরে বেড়ানো তাই নতুন কিছু নয়। কিন্তু পানির নিচে গান গাওয়া সত্যি বিস্ময়কর!

ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি এই অসাধ্য সাধন করেছে ‘বিটুইন মিউজিক' নামের ডেনিশ ব্যান্ড। মানবতার বার্তা দিতে পানির নিচেই গানবাজনা করেছেন। অসাধারণ সাউন্ড এক্সপেরিমেন্টের সাহস দেখিয়েছে এই ব্যান্ড দলটি।

ব্যান্ডের প্রধান গায়িকা ছিলেন নেনা বেক। পানির নিচে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “পানির নিচে গান গাইলে শ্বাস ছাড়ার সুযোগ নেই। ছোট্ট এক এয়ার বাবলের মধ্য দিয়ে গান গাইতে হচ্ছে। সব বুদবুদ বার করে দিলে মাইক্রোফোনে প্রচণ্ড শব্দ হবে। ছোট্ট বুদবুদ বার  করে সামান্য শব্দ করে সেটি আবার শুষে নিতে হয়েছে। এভাবেই পুরো সময়টা গান করেছি।”

পানির নিচে গান গাওয়ার আগে মহড়া করতে হয়েছে ব্যান্ড দলটির। ডেনমার্কের ওরহুস শহরে তারা পারফরম্যান্সের জন্য মহড়া করছেন। একটানা দেড় মিনিট পর্যন্ত পানির নিচে থাকতে পারেন সংগীতশিল্পীরা। এরপর নিশ্বাস নিতে হয়।

নেনা বলেন, “যখন ইচ্ছে হয় তখনই মাথা তুলি আমরা। পানির নিচেই থাকতে হবে এমন কোনো চাপ নেই। সব সময় ওপরে উঠে বাতাস নেওয়ার সুযোগও ছিল।”

কোন বাদ্যযন্ত্রগুলো পানির নিচে আদৌ বা কতটা ভালো কাজ করে, তা-ও খতিয়ে দেখেছে ‘বিটউইন মিউজিক' গোষ্ঠীর সদস্যরা। অসংখ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন তারা।

নেনা বলেন, “বাদ্যযন্ত্রগুলোর মধ্যে ড্রাম বাজানোর অভিজ্ঞতা একটু কষ্টকর ছিল। ড্রাম বাজাতে পানির চাপ বাধা সৃষ্টি করে।”

‘বিটুইন মিউজিক’ গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা লায়লা স্কোমেন বলেন, ‘আমরা এক সুইমিং পুল ভাড়া করে সেখানে গং ও বেহালা বাজিয়ে দেখেছিলাম। ছোট্ট বাদ্যযন্ত্র হিসেবে বেহালা সত্যি সংগীত সৃষ্টি করায় আমরা বেশ অবাক হয়েছিলাম। বেহালার স্ট্রিং বা তারের ওপর একটানা চাপ ও গতি থাকায় সেটা সম্ভব হয়। ছোট্ট সাউন্ড সৃষ্টি হয়, শুনলে মনে হয় যেন বহু পুরোনো কোনো রেকর্ডিং বাজছে। কারণ, পানির নিচে মিডল রেঞ্জের ধ্বনি সৃষ্টি হয়।”

পুরো আয়োজনটি ছিল ভূমধ্যসাগরে ডুবে মৃত্যু হওয়া অসংখ্য শরণার্থীর স্মরণে। তাদের প্রতি মানবতা প্রকাশেই পানির নিচে গান পরিবেশন করে ব্যান্ড দলটি।

ব্যান্ড সদস্যরা বলেন, “ইউরোপে শরণার্থীদের অভিজ্ঞতা ও পরিস্থিতি মাথায় রেখে পানিতে পারফর্ম করেছি। পারফর্ম করতে গিয়ে অনেক আবেগজড়িত ছিলাম আমরা। যে পানিতে এই শরণার্থীরা ডুবে যাচ্ছেন, আমরা সেই একই পানিতে রয়েছি। আমাদের মনে সেই বোধ ছিল। সেটা ছিল কঠিন এক অভিজ্ঞতা।”

Link copied!