শীত মানেই বিয়ের উৎসব। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় থাকে নানা প্রস্তুতি। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষেই শুরু হয় নতুন সংসার। ছোট্ট ছোট্ট আশা, আকাঙ্ক্ষার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে নতুন সেই সংসারে। নতুন ঘরের প্রতিটি কোণে প্রকাশ মেলে নিজের ব্যক্তিত্বের।
নব দম্পতির নতুন পথচলা। কারো নতুন সংসার শুরু হয় নতুন ফ্ল্যাটে বা কারো ভাড়া বাড়িতে। পথচলার শুরু যেখানেই হোক, নিজের ঘরের প্রতিটি কোণে থাকা চাই মায়াবী ছোঁয়া। শুধু ঘর সাজালেই তো হবে না, নিজের ব্যক্তিত্বকে কীভাবে ঘরের কোণ ফুটিয়ে তুলবেন তা নিয়েও ভাবতে হবে। কিন্তু যারা এখনও দ্বিধায় রয়েছেন, বা সংসার সাজানোর ধারণাটাই এখনও হয়নি তারা কিছু পরামর্শকে অনুসরণ করতে পারেন। ছিমছাম সাজ, আধুনিক অন্দরসজ্জা, সাবেকি ঘরসজ্জা কিংবা অন্দরসজ্জায় বাংলার সংস্কৃতির ছোঁয়া সবকিছুই প্রতিফলন মিলবে নতুন সংসারে।
নব দম্পতিরা সংসারের শুরুতেই যেভাবে ঘর সাজাবেন তার কিছু কথা থাকছে আজকের আয়োজনে_
- একান্ত সময় বাড়ির শয়নকক্ষেই বেশি কাটবে। তাই এটি সাজিয়েই হোক শুরুটা। বেড রুমের রং হালকা হওয়া ভালো। তাতে মন শান্ত থাকে ভালো ঘুম হয়।
- ঘরের অবস্থান অনুযায়ী বিছানাটি রাখার ব্যবস্থা করুন। বড় ঘর হলে মাঝামাঝি রাখতে পারেন। আবার খাটটি ঘরের এক কোণেও সুন্দরভাবে সেট করতে পারেন। তবে খাটের আকার ও আয়তনের উপর ঘরের সাজ অনেকটাই নির্ভর করে।
- খেয়াল রাখবেন রুমের দরজা খুললেই যেন বিছানা দেখা না যায়। রেডিমেট খাট কেনার আগে অবশ্যই ঘরের আকারের দিকে খেয়াল রাখবেন। আর বানিয়ে নিলে তো পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো মাপেই করে নিতে পারে।
- খাটের মধ্যে ডেস্ক থাকলে আরও ভালো হয়। লেপ, কম্বল, মশারি, বিছানার চাদর সেখানে রাখা যাবে।
- খাটের সঙ্গে কার্পেট রাখতে পারেন। খাটের দুই পাশে ছোটো টেবিলও রাখা যায়। যেখানে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো রাখা যাবে। বেড রুমে আলমারি এবং ড্রেসিং টেবিল রাখুন।
- সব ফার্নিচারের নকশার যেন একই ধরনের হয়। ঘরের আকার অনুযায়ীই নতুন জিনিসপত্র কিনবেন। যত কম হয় জিনিসপত্র, ততই ভালো। বেডরুম খোলামেলা রাখার চেষ্টা করবেন।
- বিয়ের পর পর ঘর সাজানোর কোনো জিনিস দেখলেই কিনতে ইচ্ছে হয়। এভাবে কোনো জিনিস পছন্দ হলেই কিনে ফেলবেন না। ঘরে ওই জিনিস মানাবে কিনা তা আগে দেখে নিন।
- বসার ঘরে সাবেকি ডিজাইনের সোফা সেট রাখতে পারেন। সেখানের থিমও তখন সাবেকি রাখুন। নতুন ফ্যাশনের সোফা থাকলে এর সঙ্গে শো পিসের শোকেজ রাখতে পারেন।
- ড্রইং রুমের ওয়ালে পরিবারের একটি ফোটো রাখতে পারেন।
- ড্রয়িং রুম বড় হলে সেখানে সোফা সেটের সঙ্গে ডাইনিং টেবিল রাখতে পারেন।
- সোফার সঙ্গে মানানসই কার্পেট রাখতে পারেন। দেয়ালের কোণা সাজাতে পারেন ইন্ডোর প্ল্যান্ট দিয়ে।
- সোফা না থাকলে ম্যাট্রেস, তোষক বা গদি দিয়ে ঘরের কোনা সাজিয়ে নিতে পারেন। এর উপর বড় বড় কুশন দিয়ে সাজিয়ে নিন।
- বসার ঘরে হালের ফ্যাশনের নরম তুলতুলে রাগ ব্যবহার করতে পারেন। শীতকালে এতে উষ্ণতা পাবেন। গরমকালে লাগবে আরাম। বিভিন্ন সাইজের রাগ কিনতে পাওয়া যায়। ঘরের সাইজ বুঝে গাঢ় রঙের রাগ কিনুন।
- ঘরের কোণে বিন ব্যাগ রাখুন। ছোটো থেকে বড় বিভিন্ন সাইজের রঙিন বিনব্যাগ পাওয়া যায়। এতে আরাম করে বসতে পারবেন।
- সুইং চেয়ার রাখতে পারেন। এই চেয়ারের বসে বই পড়ুন বা গান শুনুন। বিভিন্ন মডেলের সুইং চেয়ার পাওয়া যাবে। পছন্দমতো কিনে নিন।
- রান্নাঘরে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কিনুন। এক্ষেত্রে তালিকা করে নিতে পারেন। প্রথমে প্রয়োজনীয় পাত্র দিয়ে সাজিয়ে নিন। বড়, ভারী পাত্র কিনে অযথা রান্নাঘরে ভিড় করবেন না। মশলার কৌটগুলো কিনে তার গায়ে নাম লিখে রাখতে পারেন।
- রান্না ঘরের জন্য় আধুনিক ডিজাইনের চুলা কিনে নিন। যথাসম্ভব জিনিসপত্রগুলো ক্যাবিনেটের ভেতরে রাখুন।
- ফ্ল্যাটের দরজার বাইরে দু'জনের নামের 'নেম প্লেট' লাগিয়ে নিন। 'মিস্টার ও মিসেস' সম্বোধনে ঘরের প্রবেশ মুখেই আন্তরিকতার ছোয়া মিলবে।