মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় উত্সবের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঈদ উল আজহা। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে প্রিয় পশুকে কোরবানি দেওয়ার মধ্য দিয়ে এই ঈদ পালিত হয়। এই উপলক্ষে দেশজুড়ে বসে পশুর হাট। সামর্থ্য ও বাজেট অনুযায়ী পছন্দের পশু কিনে নেন। এরপর কোরবানি করেন। কোরবানি দেওয়ার পেছনে কিছু শর্ত রয়েছে।
কোরবানির কিছু নিয়ম রয়েছে যা সব মুসল্লিদের জানা জরুরি। চলুন সেই নিয়মগুলো জেনে নেই_
কোরবানির সময়
জিলহজের দশ, এগারো ও বারো তম দিনে কোরবানি করা যাবে। তিনদিনের যে কোনও দিন কোরবানি করা জায়েজ। তবে প্রথমদিনই কোরবানি করা উত্তম। জিলহজের দশম দিন ঈদের নামাজ পড়ার পর থেকে জিলহজের ১২ তাবিখ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত পশু কোরবানি দেওয়া যায়। শহরের যেকোনও এক স্থানে নামাজ আদায় হলে অন্য সবস্থানে কোরবানি দেওয়া যাবে।
কোরবানির নিয়ম
কোরবানি দাতা নিজেও জবেহ করতে পারবেন। কোনও আলেম দিয়েও কোরবানি করা যাবে। নিজে কোরবানি দেওয়া উত্তম। কোরবানির সময় মুখ দিয়ে উচ্চারণ করে নিয়ত করা জরুরি নয়। অন্তর থেকে নিয়ত করলেই তা কবুল হয়ে যায়। তবে কোরবানির আগে অবশ্যই আল্লাহ পাকের নাম নিতে হবে।
পশুর চামড়া
কোরবানির পশুর চামড়া মাদ্রাসার লিল্লাহ ফান্ডে দান করা যাবে। অন্যকে হাদিয়া হিসাবে দিতে পারবেন। নিজেও ব্যবহার করা যাবে। চামড়া বিক্রি করলে সেই টাকা গরিবদের দান করতে হবে।
কোরবানির গোশত যেভাবে ভাগ হবে
কোরবানির গোশত নিজে খাবেন এবং গরিবদের মাঝে ভাগ করে দেবেন। গোশতকে তিনভাগে ভাগ করে দেওয়া উত্তম। গরিবদের জন্য একভাগ, আত্মীয়-স্বজনকে একভাগ এবং একভাগ নিজের পরিবারের জন্য রাখা যাবে।
কাদের জন্য় কোরবানি ওয়াজিব
- প্রত্যেক স্বাধীন, ধনী, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কের নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
- কোনও ব্যক্তির প্রয়োজনীয় খরচ ব্যতীত সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা কিংবা এর সমপরিমাণ সম্পদ থাকলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
- জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় জমি ও ফসল থাকার পর অতিরিক্ত জমি ও ফসল থাকলে এর মূল্য যদি নেসাব পরিমাণ হয় তবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
- নেসাব পরিমাণ মাল পূর্ণ এক বছর থাকতে হবে। কোরবানির শেষদিন সূর্যাস্তের আগে কোনও ব্যক্তি যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন তবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
- একই পরিবারের অন্য সদস্যরাও পৃথকভাবে নেসাব সম্পদের মালিক হলে কোরবানি ওয়াজিব হবে।
- কোনও ব্যক্তি উদ্দেশ্য পূরণের প্রেক্ষিতে মানত করলে সেই উদ্দেশ্য পূরণ হলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে।