ঈদ মানেই নতুন জামাকাপড়, পোলাও, কোর্মা, জর্দা আর ঝাল ঝাল সব খাবার। ঈদের দিনে ভালো খাবার হবে না, এমনটা ভাবা যায় না। ছোট–বড় সবারই ভীষণ পছন্দের ঈদে রান্নার সব আয়োজন।
রাত পোহালেই আসছে ঈদের দিন। দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার পর আগামীকাল মুসলমান ধর্মের উৎসবের দিন, ঈদুল ফিতর। ঘরে ঘরে রান্না হবে মুখরোচক নানান খাবার। ঈদের দিন দাওয়াতের যেন কমতি থাকে না। কোনটা রেখে কোন দাওয়াতে যাবেন, তা নিয়েই যত ভাবনা। সকালের মিষ্টি খাবারের পর দুপুর থেকে শুরু হবে ঝাল ঝাল গুরুভোজ। ঈদে খাওয়ার টেবিলে থাকবে সব নানান পদ।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ঈদে রান্নার নানান পদ সম্পর্কে
বিফ বারবিকিউ কাবাব
বিফ বারবিকিউ কাবাব বানাতে যা যা লাগবে
- গরুর কিমা-১ কেজি
- পেঁয়াজবাটা-১ টেবিল চামচ
- কাঁচা পেঁপে বাটা-১ কাপ
- আদাবাটা-১ টেবিল চামচ
- রসুনবাটা -১টেবিল চামচ
- বড় কালো এলাচ-৩টি
- ছোট এলাচ-৬টি
- তেজপাতা-৩টি
- দারুচিনি -৪/৫ পিস
- কালো গোলমরিচ-১ চা-চামচ
- পোস্ত দানা বাটা-১ টেবিল চামচ
- কাবাবচিনি-৮/১০টি
- জিরা বাটা-১ টেবিল চামচ
- শুকনা মরিচ গুঁড়া-২ টেবিল চামচ
- শাহিজিরা-২ চা চামচ
- শিক ৮/১০টি
- লেবুর রস-১ টেবিল চামচ
- লবণ-স্বাদমতো
- সরিষার তেল-পরিমাণমতো
বিফ বারবিকিউ কাবাব যেভাবে বানাবেন
প্রথমে মাংস ধুয়ে নিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার পেঁয়াজবাটা, পেঁপেবাটা, লবণ, তেল, জিরাবাটা, আদা ও রসুনবাটাসহ বাকি সব মসলা দিয়ে খুব ভালো করে মাখাতে হবে। মসলাগুলো দিয়ে মাখিয়ে ২-৩ ঘণ্টা মেরিনেট করে রেখে দিন।
এবার মেরিনেট করা মাংসগুলো শিকে গেঁথে নিন। এরপর এটা কয়লার আগুনে ঝলসিয়ে নিয়ে চারপাশ পোড়া পোড়া করে নামিয়ে নিন। নান, পোলাও, গরম ভাত, লাচ্ছা পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন।
দরবারি মোরগ পোলাও
দরবারি মোরগ পোলাও বানাতে যা যা লাগবে
- পোলাওয়ের চাল-১ কেজি
- মোরগ-৪ কেজি
- দারচিনি-১০ টুকরা
- ছোট এলাচ-৮টি
- লবঙ্গ-৮টি
- তেজপাতা-৪টি
- জায়ফল-জয়ত্রি গুঁড়া-আধা চা চামচ
- ঘি-আধা কাপ
- তেল-২ কাপ
- কাঁচা মরিচ-৮-১০টি
- পেঁয়াজবাটা-৪ টেবিল চামচ
- আদাবাটা-২ টেবিল চামচ
- রসুনবাটা-আধা টেবিল চামচ
- পোস্তদানা বাটা-দেড় টেবিল চামচ
- সাদা গোলমরিচ গুঁড়া-দেড় চা-চামচ
- জাফরান-আধা চা-চামচ
- টক দই-১ কাপ
- পেঁয়াজকুচি-৩ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজ বেরেস্তা-২ কাপ
- পেস্তাবাদাম কুঁচি-৪ টেবিল চামচ
- কিশমিশ-২ টেবিল চামচ
- টমেটো সস-৩ টেবিল চামচ
- লবণ-পরিমাণ মতো
- চিনি-২ চা চামচ
- মালাই-১ কাপ
- আলুবোখারা-৮টি
- পেস্তাবাদাম বাটা-২ টেবিল চামচ
- মাওয়া গুঁড়া-আধা কাপ
- দুধ-১ কাপ
- কেওড়া-১ টেবিল চামচ
দরবারি মোরগ পোলাও যেভাবে বানাবেন
প্রথমে মোরগ চামড়া ছাড়িয়ে গলার হাড় বাদ দিয়ে চার টুকরা করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে ১ টেবিল চামচ পোস্তদানা বাটা, আদাবাটা, রসুনবাটা, চিনি, জায়ফল-জয়ত্রি গুঁড়া, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া, টমেটো সস, লবণ, আলুবোখারা, টক দই দিয়ে মাখিয়ে ৩০-৩৫ মিনিট রাখতে হবে। জাফরান কেওড়া ও ২ টেবিল চামচ দুধ দিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে। ঘি-তেল একসঙ্গে চুলায় দিয়ে পেস্তাবাদাম, কিশমিশ অল্প ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলে গরম মসলা ও তেজপাতার ফোড়ন দিয়ে মাখানো মাংস দিয়ে কষাতে হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে পানি শুকিয়ে গেলে মাংসের টুকরা তুলে রাখতে হবে। ওই হাঁড়িতে ৭ কাপ পানি, লবণ দিয়ে চুলায় দিতে হবে। ফুটে উঠলে চাল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। চালের পানি কমে এলে দুধের সঙ্গে আধা টেবিল চামচ পোস্তদানা গুলিয়ে দিতে হবে। কিছুটা মাওয়া গুঁড়া দিয়ে ২০ মিনিট অল্প জ্বালে রাখতে হবে।
মালাইয়ের সঙ্গে পেস্তাবাদাম বাটা মিলিয়ে অর্ধেকটা রান্না মাংসের সঙ্গে মিলিয়ে কিছুটা বেরেস্তা দিয়ে মিলিয়ে রাখতে হবে। পোলাওয়ের পানি শুকিয়ে এলে কিছুটা পোলাও উঠিয়ে মোরগের মাংস সাজিয়ে কিছু বেরেস্তা, কাঁচা মরিচ, মাওয়া গুঁড়া দিয়ে বাকি পোলাও দিয়ে ভেজানো জাফরান দিয়ে বাকি মালাই দিয়ে বেরেস্তা, পেস্তাবাদাম কুচি ছিটিয়ে ২৫ মিনিট দমে রাখতে হবে।
শাহি রেজালা
শাহি রেজালা বানাতে যা যা লাগবে
- খাসির মাংস-দেড় কেজি
- পেঁয়াজবাটা-আধা কাপ
- আদাবাটা-দেড় টেবিল চামচ
- রসুনবাটা-আধা টেবিল চামচ
- শাহি জিরা বাটা-১ চা চামচ
- পোস্তদানা বাটা-১ টেবিল চামচ
- শুকনা মরিচ গুঁড়া-১ চা চামচ
- পেঁয়াজকুচি-আধা কাপ
- টক দই-আধা কাপ
- তেঁতুলের মাড়-১ টেবিল চামচ
- দুধ-১ কাপ
- লবণ-পরিমাণমতো
- চিনি-১ টেবিল চামচ
- কাঁচা মরিচ-৮-১০টি
- তেজপাতা-৪টি
- দারচিনি-৬ টুকরা
- এলাচ-৬টি
- লবঙ্গ-৫টি
- কেওড়া-১ টেবিল চামচ
- বাদামবাটা-২ টেবিল চামচ
- বেরেস্তা-আধা কাপ
- সাদা গোলমরিচ গুঁড়া-আধা চা চামচ
- জায়ফল-জয়ত্রি গুঁড়া-আধা চা চামচ
- গরম মসলার গুঁড়া-১ চা চামচ
- আলুবোখারা-৮টি
- পেস্তাবাদামকুচি-২ টেবিল চামচ
- ঘি আধা-কাপ
- তেল-আধা কাপ
- জর্দার রং-সামান্য
- কেওড়া-১ টেবিল চামচ
শাহি রেজালা যেভাবে বানাবেন
মাংস টুকরা করে ধুয়ে সব বাটা মসলা, দই, লবণ, গরম মসলা, তেজপাতা, আলুবোখারা দিয়ে মাখিয়ে এক ঘণ্টা রাখতে হবে। হাঁড়িতে তেল বা ঘি গরম করে পেঁয়াজ ঘিয়ে রং করে ভেজে মসলা মাখানো মাংস দিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করতে হবে। মাংস তেলের ওপর এলে গরম পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করতে হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে ঝোল শুকিয়ে এলে দুধের সঙ্গে বাদাম বাটা গুলিয়ে দিতে হবে। জর্দার রং কেওড়ার সঙ্গে গুলিয়ে দিতে হবে। চিনি, কাঁচামরিচ, তেঁতুলের মাড় দিতে হবে। মাংস তেলের ওপর এলে পেঁয়াজ বেরেস্তা, গরম মসলার গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে মাংসে দিতে হবে। শাহি রেজালা পোলাও, পরোটা ও লুচির সঙ্গে পরিবেশন করা যায়।
খাসির আচারি মাংস
খাসির আচারি মাংস বানাতে যা যা লাগবে
- খাসির মাংস-দেড় কেজি
- আম বা জলপাইয়ের আচার-৩ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজকুচি-২ কাপ
- আদাবাটা-২ টেবিল চামচ
- রসুনবাটা-২ চা চামচ
- জিরাবাটা-১ চা চামচ
- বাদামবাটা-১ টেবিল চামচ
- সরিষাবাটা-১ টেবিল চামচ
- মরিচগুঁড়া-১ টেবিল চামচ
- হলুদগুঁড়া-১ চা-চামচ
- লবণ-পরিমাণমতো
- দারচিনি-৪ টুকরা
- এলাচ-৪টি
- তেজপাতা-৪টি
- মেথি-আধা চা চামচ
- তেল-১ কাপ
- কাঁচা মরিচ-৫-৬টি
- টকদই-আধা কাপ
- চিনি-১ চা-চামচ
খাসির আচারি মাংস যেভাবে বানাবেন
প্রথমে মাংস টুকরা করে ধুয়ে সব বাটা মসলা, গুঁড়া মসলা, টকদই ও লবণ দিয়ে মাখিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর তেল গরম করে মেথি ফোড়ন দিয়ে তেল ছেঁকে নিয়ে পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে মাখানো মাংস দিয়ে কষাতে হবে।
মাংস কয়েকবার কষিয়ে পরিমাণমতো গরম পানি দিয়ে রান্না করতে হবে। পানি সম্পূর্ণ শুকিয়ে মাংস ভাজা ভাজা হলে কাঁচা মরিচ, চিনি, আচার দিয়ে মাংস ভুনা ভুনা করে নামাতে হবে। ফুটে উঠলে আচ কমিয়ে দমে রাখুন। তৈরি খাসির আচারি মাংস।
শাহি বোরহানি
শাহি বোরহানি বানাতে যা যা লাগবে
- টক দই-২ কেজি
- আমন্ড বাদামবাটা-১ টেবিল চামচ
- পেস্তাবাটা-১ টেবিল চামচ
- সরিষা গুঁড়া-২ টেবিল চামচ
- পোস্তদানা বাটা-১ টেবিল চামচ
- গুঁড়া দুধ-১ কাপ
- লবণ-পরিমাণমতো
- বিট লবণ-১ টেবিল চামচ
- চিনি-৩ টেবিল চামচ
- পুদিনা পাতা বাটা-১ টেবিল চামচ
- কাঁচামরিচ বাটা-১ চা চামচ
- জিরা টালা গুঁড়া-১ চা চামচ
- ধনে টালা গুঁড়া-১ চা চামচ
- সাদা গোলমরিচ গুঁড়া-১ চা চামচ
- পানি-পরিমাণমতো (দইয়ের ঘনত্ব বুঝে আন্দাজমতো পানি দিতে হবে)।
শাহি বোরহানি যেভাবে বানাবেন
প্রথমে দুই কাপ পানির সঙ্গে সব মসলা মিশিয়ে পাতলা কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। এবার সব উপকরণ একসঙ্গে খুব ভালোভাবে মিলিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে বোরহানি পরিবেশন করা যায়।