• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শহীদ মিনার, ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২, ০৫:১৭ পিএম
শহীদ মিনার, ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা

২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালে সোচ্চার হয়ে উঠে বাঙালিরা। শুরু হয় ভাষা আন্দোলন। আন্দোলনের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন সালাম, বরকত, রফিকসহ অনেকে। তাই শহীদদের স্মরণে দিনটিকে শহীদ দিবস হিসাবে পালিত হয়। এরপর জাতিসংঘ কর্তৃক দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

১৯৫২ সালেই ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হয়। কিন্তু পাকিস্তানিরা সেই শহীদ মিনার ভেঙে ফেলে। পরে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয় ১৯৫৭ সালে। ওই বছর আবারও  কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ভাস্কর হামিদুর রহমান এর নকশা করেন। কিন্তু ১৯৫৮ সালে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান পাকিস্তানে সামরিক আইন জারির পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাজ বন্ধ করে দেন। এরপর আবারও লেফটেন্যান্ট জেনারেল আযম খানের আমলে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তত্কালীন  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি  শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধান করে। অবশেষে নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৬৩ সালে। ওই বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনে শহীদ আবুল বরকতের মা হাসিনা বেগম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন।

ভাষা শহীদদের স্মরণে ঢাকা মেডিকেলের পাশেই নির্মিত হয় শহীদ মিনার। বিশেষ এই দিনটিতে বাঙালি জাতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানান। জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে ছোট-বড় সবাই দলে দলে শহীদ মিনারে ফুল দেন। বাঙালির ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে দিনটি। কালো-সাদা পোশাকে সবাই উপস্থিত হোন শহীদ মিনারে। একসঙ্গে নিরবতায় শ্রদ্ধা জানান ভাষা শহীদদের।

বায়ান্নর সেই আন্দোলনের শুরু না হলে, ভাষা সৈনিকরা প্রতিবাদ না জানালে, শহীদদের রক্ত না ঝরলে হয়তো আজ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে পাওয়া যেত না। প্রাণের ভাষা বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করার স্বাধীনতা পেত না বাঙালিরা। বাংলার গান, কবিতার মধ্য দিয়ে শহীদদের স্মরণে সেই কথাই প্রকাশ করা হয় এই দিনে। জানানো হয় কৃতজ্ঞতা।

শহীদদের স্মৃতিসৌধ শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া সেই শ্রদ্ধারই প্রতিফলন। ঘড়ির কাটা রাত বারোটায় পড়লেই শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া শুরু হয়। পরিবার, বন্ধু বা সহকর্মীদের নিয়ে যখন শহীদ মিনারে যাবেন তখন অবশ্যই কিছু বিষয় খেয়াল রাখবেন।

  • সব বাঙালির অধিকার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। আপনিও তাদেরই একজন। শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে তাই প্রতিযোগিতা করবেন না। নিয়ম মেনে সুস্থ পরিবেশে ফুল দিন। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
  • ফুল দিয়ে সেখানে বেশি সময় অবস্থান করবেন না। অন্যদের সুযোগ দিন।
  • শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে খালি পায়ে যেতে হয়। নিজের জুতো হাতে নিয়ে খালি পায়ে সেখানে যান। সঙ্গে ব্যাগ বহন করতে পারেন। সেখানে জুতো বা স্যান্ডেল রাখা সহজ হবে।
  • শহীদ মিনারের পরিবেশ নষ্ট করবেন না। দিন শেষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষ হলে সেখানের পরিবেশ নষ্ট করবেন না। খাবারের কোনো জিনিস বা অন্যকিছু সেখানে ফেলবেন না। যা পরিবেশ নষ্ট করে।
  • ছোটরা সঙ্গে থাকলে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। তাদের হাত ছাড়া করবেন না। সঙ্গে পানি এবং কিছু খাবার রাখবেন।
Link copied!