লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা বেশ বিরক্তিকর। রেল বা সিনেমার টিকিটের জন্য় কিংবা ব্যাংকের কাজেও লাইন থাকে। লাইনে দাঁড়ানো ধৈর্য ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপারও বটে। ব্যস্ততায় অত সময়ও পাওয়া যায় না। কিন্তু অস্বস্তি বোধ হলেও লাইনে তো দাঁড়াতেই হবে।
লাইনে দাঁড়ানোকেই কেউ আবার পেশা হিসেবেই নিয়েছেন। অন্যের ভোগান্তি কমাতে নিজেই লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে দিচ্ছেন। এর থেকে আয়ও করছেন লাখ লাখ টাকা।
অবাক নয়, এটিই সত্যি! ব্রিটেনের ফুলহ্যামের বাসিন্দা ফ্রেডি বেকিট। তার পেশা ‘কিউয়ার’। যেসব ধনী এবং সম্ভ্রান্ত পরিবার কোনো কিছুর লাইনে দাঁড়াতে চান না, তাদের হয়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানোর কাজটি করেন তিনি। খেলার টিকিট হোক বা সিনেমা, থিয়েটার বা কোনো অনুষ্ঠান, ডাক পড়ে ফ্রেডির। লন্ডনে এই পেশাকে কিউয়ার বলা হয়।
ফ্রেডি জানান, একবার দাঁড়ানোর জন্য় ঘণ্টাপ্রতি প্রায় ২০ ডলার আয় হয় তার। বাংলাদেশি মুদ্রায়, যা ২ হাজার ৩৪০ টাকা। দিনে ১৬০ পাউন্ড (১৮ হাজার ৭২১ টাকা) আয় করেন তিনি। সে হিসেবে মাসে তার আয় হয় ৫ লাখ ৬১ হাজার ৬৩০ টাকা।
ফ্রেডি বলেন, বেশ ভালোই লাগে লাইনে দাঁড়াতে। বেশি ভালো লাগে সম্ভ্রান্ত পরিবারের হয়ে জনপ্রিয় কোনো অনুষ্ঠানের টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে। কারণ তখন আয় বেশি হয়।
যেদিন অ্যাপোলো থিয়েটারের মতো জায়গাগুলোতে জনপ্রিয় কোনো অনুষ্ঠান থাকে। এসব অনুষ্ঠানের টিকিট সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত ধনী লোকদের জন্য লাইনে দাঁড়ান তিনি।
সব বয়সী গ্রাহকই রয়েছে ফ্রেডির। অল্পবয়স বা বয়স্করা সবার জন্য়ই লাইনে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ঠান্ডার মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতেও কষ্ট হয় না তার। ভালো লাগা থেকেই এই কাজকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন ফ্রেডি।
শীতকালে তুলনামূলক আয় কম হয়। কারণ মানুষ এ সময় ঘর থেকে কম বের হয়। অনুষ্ঠানও কম হয়। তবে গরমকালে এই কাজে রমরমা আয় হয়। এ সময় লন্ডনে বড় বড় সব অনুষ্ঠান আয়োজন হয়। তাতে লোকসমাগমও হয় প্রচুর।
ফ্রেডি বলেন, ‘গত ৩ বছর ধরে এই কাজ করছি। বেশ উপভোগ করি। লাইনে দাড়িয়ে অনেক মুহূর্ত দেখার সুযোগ হয়। ঘণ্টা প্রতি ২০ পাউন্ডের বেশি দাবি না। কারণ এই কাজে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন হয় না।’
এই কাজের বাইরে আরও কাজে যুক্ত রয়েছেন ফ্রেডি। পোষা প্রাণীর দেখভাল, প্যাকিং, খাবর বা জিনিসপত্র আনা-নেওয়া ও বাগানের কাজ করেন তিনি। স্থানীয় অনলাইন মার্কেটপ্লেসে নিজের সেবাগুলো নিয়ে বিজ্ঞাপনও দেন।
অদ্ভূত পেশা বেছে নেওয়া ফ্রেডির রয়েছে আরও একটি পরিচয়। কাজের ফাঁকে তিনি উপন্যাসও লিখতে ভালোবাসেন।
সূত্র: মিরর ইউকে