• ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

মেহেদির রঙে রঙিন ঈদ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১, ২০২২, ০৩:৫০ পিএম
মেহেদির রঙে রঙিন ঈদ

মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় উত্সবের একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর। ঈদ উৎসবে নানা আয়োজন থাকে। নতুন পোশাক কেনা, উপহার দেওয়া-নেওয়া, দাওয়াতে যাওয়া কিংবা অতিথিদের আগমনে খাবারের আয়োজন, ঘুরে বেড়ানো সবকিছু মধ্যেই ঈদ আনন্দ কাটে। এসবের আগে নিজেকে সাজাতে ব্যস্ত এখন সবাই। বিশেষ করে নারীরা আপাদমস্তক নতুনভাবে সেজে নেন। পার্লারে বা ঘরে বসেই ত্বক, চুলের যত্ন নেয়। আর থাকে হাত ভরা মেহেদি।

ঈদ উৎসবে মেহেদির রঙে হাত সাজাতে ছোট বড় সবাই প্রস্তুত। বিশেষ করে ঈদের দুই দিন আগ থেকেই মেহেদি পড়ার ধুম পড়ে। অনেকে পাকা রং পেতে ঘরেই মেহেদি বানিয়ে লাগিয়ে নেন। আবার সুন্দর করে মেহেদি পরতে ভিড় জমান পার্লারে। দুই হাত ভরে হরেক ডিজাইনের মেহেদি এঁকে নেন।

চাঁদরাতে হাতে মেহেদি পরার চল বহু আগে থেকেই। ঈদের চাঁদ দেখেই মেহেদি লাগানোর ধুম পড়ে। রাত জেগে মেহেদি পড়েন বাড়ির মেয়েরা। এটি এখন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যেরও অংশ হয়ে গেছে। ঈদ, বিয়ে বা যেকোনো উত্সবেই এখন হাতে মেহেদি লাগানো হয়। কারণ মেহেদির সুগন্ধি নিয়ে আসে উৎসবের আমেজ।

ঈদে মেহেদির ডিজাইন কেমন হবে_

হাত জুড়ে সরল মেহেদী ডিজাইন করে নিতে পারেন। অল্প সময়ে এই নকশা করা যায়। জটিলও নয়। হালকা ডিজাইনে অনায়াসে গর্জিয়াস লুক দেয়। তাছাড়া সরল মানেই সাধারণ ডিজাইন বলে ভারী হবে না তা কিন্তু নয়। খুব বেশি জটিল নকশা ছাড়া হাতে মেহেদিতে ভরাট করাই হলো সরল মেহেদি ডিজাইন। 

মেহেদির নকশায় চমক আনবে ফুলের নকশা। বক্রতা এবং প্রবাহী নকশার আঙ্গিকে এটি করা হয়। এটি হাতের এক কোণা থেকে অন্য কোণা পর্যন্ত একে নেওয়া যায়। আবার ফুলের নকশা হাতের কোন এক অংশে করলেও বেশ লাগে।

হাতজুড়ে বিস্তৃতি মেহেদি ডিজাইন পরে বিয়ের কণে। বিয়ের আয়োজনে গর্জিয়াস লুক দিতে কণের দুই হাতের দুই পিঠেই মেহেদির ডিজাইন আঁকা হয়। তবে এটা ঈদের মৌসুমেও অনেকে পছন্দ করেন। নিজের দুই হাত জুড়ে মেহেদি পড়েন। অনেক ধরণের নকশা ফুটে উঠে এতে। 

প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরেই যেভাবে মেহেদি বানাবেন_

ঈদ উপলক্ষে বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মেহেদি পাওয়া যাবে। তবে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি মেহেদির গুণগত মান সবচেয়ে ভালো। এতে পাকা রং পাওয়া যায়। আবার স্থায়ীত্বও বেশি থাকে।

ঘরে কমলা রঙের মেহেদি বানিয়ে নিতে পারেন। এরজন্য় প্রয়োজন হবে রাজস্থানি মেহেদি পাউডারের। ১০০ গ্রাম মেহেদি পাউডারের সঙ্গে ৩০ গ্রাম চিনি, এসেনশিয়াল অয়েল ৩০ গ্রাম ও পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এরপর একটি সেলোপেপারে ভরে শক্ত করে আটকে দিন। এবার একটি টিস্যু ভাঁজ করে এর উপরে আবার সেলোপেপার দিয়ে শক্ত করে ঢেকে রাখুন। ২৪ ঘণ্টা রেখে দিন। এবার পেপার খুলে মেহেদির সঙ্গে অল্প পানি মিশিয়ে নরম করুন। সবশেষে শক্ত পলিথিন দিয়ে কোণ বানিয়ে ভরে নিয়ে ব্যবহার করুন।

ঘরে বানিয়ে নিতে পারেন লাল বাদামি মেহেদিও। ৬ টেবিল চামচ মেহেদি পাউডারের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ চিনি, ২ টেবিল চামচ ভিক্স, ১ কাপ গাঢ় করে করা চা-পাতার লিকার মিশিয়ে নিন। পলিব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাখুন। ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা গরম কোনো স্থানে রেখে দিন। এরপর পলিথিনের কোণ বানিয়ে মেহেদি ভরে ব্যবহার করুন।

গাঢ় বাদামি রঙের মেহেদি বানাতেও লাগবে মেহেদি পাউডার আর চিনি। সঙ্গে কফি পাউডার ও চায়ের লিকার মিশিয়ে নিন। শক্ত করে পলিব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাখুন এক ঘণ্টা। এরপর পলিথিনের কোণে ভরে ব্যবহার করা যাবে।

মেহেদি লাগিয়ে যা করবেন_

  • মেহেদি পরার আগেই হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর শুকিয়ে গেলেই মেহেদি পরতে হবে।
  • হাতে মেনিকিউর করে নেওয়া ভালো। এতে মেহেদির রং গাঢ় হবে। 
  • হাতে মেহেদি লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন। সম্ভব না হলে অন্তত ৩ ঘণ্টা মেহেদি লাগিয়ে রাখুন। 
  • মেহেদি শুকিয়ে গেলে ভালো করে হাত পরিষ্কার করে নিন। সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে হাত ধোবেন না।
  • গাঢ় রং পেতে লেবুর রস ও চিনিমিশ্রিত পানিতে তুলা ভিজিয়ে মেহেদির উপর লাগিয়ে নিন। মেহেদি শুকিয়ে এলে গাঢ় রং গাঢ় হবে। স্থায়ীও হবে। 
  • মেহেদি শুকিয়ে যাওয়ার পর হাতে লোশন বা বাম লাগিয়ে নিন। রং স্থায়ী হবে।
  • মেহেদি তুলে হাতে সরষের তেলও দিতে পারেন। এটি মেহেদির রঙকে গাঢ় করবে।
Link copied!