সৃষ্টির শুরুর দিক থেকেই চুল ও ত্বকের যত্নে তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। এক-এক তেলের এক-এক পুষ্টিগুণ। রূপচর্চা ও সৌন্দর্য রক্ষায় বিভিন্ন রকমের তেলের ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। তবে বর্তমানে তেলের তুলনায় বাজারজাত প্রসাধনীর প্রচলনই বেশি। তেল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি। তাই তেলের ব্যবহারেই আপনার ত্বক পাবে সঠিক পুষ্টি উপাদান। কার্যকরী তেল ত্বকের কোষের ভেতরে খুব দ্রুত মিশে গিয়ে ভেতর থেকে ত্বককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলে। ত্বক হয়ে ওঠে নরম ও মসৃণ।
চলুন জেনে যাক ত্বকের যত্নে কোন তেল কোন ধরনের উপকারে আসে।
অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েলে রয়েছে ভিটামিন এ, ই এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ত্বককে সতেজ রাখে। ত্বকে ময়েশ্চারাইজারেরও কাজ করে অলিভ অয়েল।
- শুষ্ক ত্বকে মেকআপের সময় ফাউন্ডেশন ব্যবহারের আগে ১-২ ফোঁটা অলিভ অয়েল মুখে মেখে নিন। এতে মেকআপ বসবে ভালো এবং মেকআপের পর ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে।
- মেকআপ তোলার ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল বেশ ভালো কাজ করে। তুলো দিয়ে পুরো মুখে হালকাভাবে ম্যাসাজ করলে খুব সহজেই মেকআপ উঠে যাবে।
- প্রতিদিন ঠোঁটে এক ফোঁটা অলিভ অয়েল আঙুল দিয়ে ভালোভাবে ম্যাসাজ করলে ঠোঁটের শুষ্কতা দূর হবে এবং যাদের ঠোঁটে কালচে ভাব আছে, আস্তে আস্তে সেই কালচে ভাবও দূর হয়ে যাবে।
- অলিভ অয়েলের সঙ্গে চিনি বা লবণ মিশিয়ে ম্যাসাজ করলে এটি ভালো স্ক্রাবারের কাজ করে।
- প্রতিদিন ঘুমানোর আগে হাতে ও পায়ে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করুন। এতে পা ফাটা দূর হবে এবং হাত-পা নরম এবং সতেজ থাকবে।
নারিকেল তেল
- নারিকেল তেল ত্বকে ব্লিচ ও ক্লিনজারের কাজ করে।
- নিয়মিত নারকেল তেল ব্যবহার করলে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দূর হবে এবং ব্রণের দাগ ও ক্ষত ম্লান হবে।
- নারিকেল তেল প্রাকৃতিক আন্ডার আই ক্রিমের কাজ করে। নারিকেল তেলের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে জমিয়ে প্রতিদিন রাতে শোবার আগে চোখের নিচে লাগালে কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।
- ফেটে যাওয়া ত্বকের লাবণ্য ফিরিয়ে আনতে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।
- নিয়মিত নারকেল তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে ত্বকের পানিশূন্যতা দূর হয়।
- ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষায়ও নারিকেল তেলে বেশ উপকারী।
- চেহারায় বয়সের ছাপ দূর করে নারিকেল তেল।
তিলের তেল
- তিলের তেল ত্বকে বয়সের বলিরেখা রোধ করতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন তিলের তেলের ম্যাসাজ করলে মুখে রক্ত চলাচল বাড়বে এবং ত্বক স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
- তিলের তেল ত্বকের মরা চামড়া তুলে ফেলে এবং ত্বক সতেজ রাখে।
- ত্বকের পোড়া ভাবও দূর করে তিলের তেল।
- রাতে ঘুমানোর আগে তিলের তেল দিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করলে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার হয়।
আমন্ড অয়েল
রূপচর্চায় আমন্ড অয়েল খুবই উপকারী। এই তেলে ওমেগা-৯ ফ্যাটি অ্যাসিড, এসেনশিয়াল ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণই বেশি।
- এই তেল ত্বকের সুস্থতা এবং উজ্জ্বলতায় বেশি কার্যকরী।
- প্রতিদিন ব্যবহারে চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে না এবং বলিরেখা দূর হয়।
- রাতে ঘুমানোর আগে আমন্ড অয়লে ত্বকে মাখলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে ও হারানো জেল্লা ফিরে আসে।
- ত্বকের গভীরে গিয়ে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে এই তেল।
- যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা এই তেল কম ব্যবহার করবেন।
- আমন্ড তেল শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে। চোখের নিচের কালো দাগ বা ডার্ক সার্কেল হালকা করে এই তেল।
সূর্যমুখীর তেল
- সূর্যমুখীর তেলে তেলচিটচিটে ভাব থাকে না।
- এই তেল ব্যবহারে ত্বক হয় কোমল ও মসৃণ।
- গোসলের পানিতে এই তেল ব্যবহারে সারা দিনের ক্লান্তি ভাব দূর হয়।
- সূর্যমুখীর তেল ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন এই তেল ব্যবহারে রোদে পোড়া দাগ কমে যায়।
- শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখে।
- ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ এবং বলিরেখা পড়তে দেয় না।
সরিষার তেল
- ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে পারে সরিষার তেল।
- ত্বকে ফাটা দাগ দূর করতেও ভালো কাজ করে এই তেল।
বাদাম তেল
- চেহারায় লাবণ্য ছড়াতে বাদাম তেল মাখেন অনেকে।
- আবার ময়েশ্চারাইজারের কাজও করে এটি।
জেসমিন তেল
- জেসমিন তেলের সঙ্গে খানিকটা লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে
- ত্বককে জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।