প্রতিটি মানুষই আলাদা। স্বভাব, অভ্যাসে কিংবা আচরণে মানুষের ব্যক্তিত্বের ছাপ ফুটে উঠে। এগুলো একজনকে অন্যজন থেকে আলাদা করে। প্রবাদ আছে, কাউকে পছন্দ করার পেছনে প্রথম ছাপই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যা আমাদের প্রকৃত শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের প্রকাশ করে।
ছোট কিংবা আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ মনে হলেও এমন কিছু অভ্যাস বা আচরণ রয়েছে যা আমাদের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু প্রকাশ করে_
খাওয়ার অভ্যাস
হাফিংটন একটি পোস্টের প্রবন্ধে খাদ্য সম্পর্কিত আচরণের ব্যাখ্যা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, খাওয়ার তরিকা দেখে বোঝা যায় কে কতটা গোছানো। আমাদের ধীরস্থিরতা, গতিশীলতা ফুটে উঠে। আস্তে আহারকারীরা অনুভূতি নিয়ন্ত্রণের রাখতে পছন্দ করে। দ্রুত খাওয়া ব্যক্তিরা উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং লক্ষ্য-ভিত্তিক।
হ্যান্ডশেক
জার্নাল অব পার্সোনালিটি অ্যান্ড সোশ্যাল সাইকোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বিচারকরা হ্যান্ডশেকের ৮টি বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করেন। গবেষণায় বিচারকরা দেখেন, অংশগ্রহণকারীদের হ্যান্ডশেক ছিল নিজেদেরকে অভিব্যক্তিপূর্ণ এবং বহির্মুখী। সম্পর্কের দূরত্ব থেকে শুরু করে লজ্জা বা স্নায়বিক হওয়ার বিষয়টিও হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
নখ কামড়ানো
আপনি কি ক্রমাগত নিজের নখ কামড়াচ্ছেন? গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নখ কামড়ায়, ত্বক বা চুল মুখের কাছে টেনে নেয় তারা গভীর চিন্তাশীল হয়। তাদের পারফেকশনিস্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
সময়নিষ্ঠতা
সব কাজে দেরী করা মানুষদের দায়িত্বজ্ঞানহীন মনে করেন অনেকে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন অন্য কথা। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দেরী করে কাজ করে তারা নিখুঁততার দিকে বেশি মনোনিবেশ করে। তারা কোনো কিছু ঠিক না হওয়া পর্যন্ত হাল ছাড়ে না।
কতবার আপনার ফোন চেক করেন
আপনি যতবার আপনার ফোনটি চেক করবেন, ততই আপনার আবেগের অস্থির হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি সময় তাদের ফোনে থাকে, তারা সম্ভবত নিজেদের আগ্রহের বিষয়ে নতুন বা আকর্ষণীয় কিছু খুঁজতে থাকে। পরে এটি তাদের মেজাজের উপর প্রভাব ফেলে।
চোখের যোগাযোগ
মনোবিজ্ঞানী অ্যাড্রিয়ান ফার্নহাম বলছেন, বহির্মুখী ব্যক্তিরা কথোপকথনের সময় প্রায়ই চোখের দিকে যোগাযোগ রাখে। যেখানে অন্তর্মুখী ব্যক্তিরা চোখের যোগাযোগ কম করে।
সঙ্গীতের স্বাদ
মনোবিজ্ঞানী ডেভিড গ্রিনবার্গ ব্যক্তিত্ব প্রকাশে সংগীতের ভূমিকার কথা জানিয়েছেন। তার গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি আবেগপ্রবণ হয় তারা মৃদু সঙ্গীত শোনার দিকে মনোনিবেশ করে। অন্যদিকে যারা যুক্তিবাদী মনোভাব থাকে তারা সাধারণত উচ্চস্বরে এবং জটিল সঙ্গীত ভালোবাসে।
পোষাপ্রাণী
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কুকুর পালেন তারা বেশি উদ্যমী এবং বহির্মুখী হয়। আর যারা বিড়াল পছন্দ করেন তারা অন্তর্মুখী এবং সংবেদনশীল হয়।
হাতের লেখা
মনোবিজ্ঞানী, ক্যাথ ম্যাকনাইট বলেন, “যারা বড় অক্ষরে লেখেন তারা বেশি বহির্মুখী। যারা ছোট অক্ষরে লিখেন, আপনি অন্তর্মুখী স্বভাবের হয়। এছাড়াও যারা সুন্দরভাবে চিঠি লিখেন তারা বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল হয়। অন্যদিকে যারা চিঠি লিখতে পছন্দ করেন না তারা বাস্তববাদী হয়।
কর্মীদের প্রতি আচরণ
অফিস কিংবা বাড়িতে যারা আপনার সেবায় কাজ করছেন তাদের প্রতি আপনার আচরণও ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলবে। তারা কর্মীদের প্রতি অসভ্য আচরণ করলে অন্যদের প্রতিও তেমনটা্ই আচরণ করবে। অনেকে রেস্তোরাঁর কর্মীদের প্রতি অসভ্য আচরণ করা ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করেন না।
সূত্র: অ্যাওয়ারনেস অ্যাক্ট