• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দেউলিয়া শ্রীলঙ্কায় তেলের লাইনে মরছে মানুষ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২২, ০৪:২৮ পিএম
দেউলিয়া শ্রীলঙ্কায় তেলের লাইনে মরছে মানুষ

অর্থ সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া হিসেবে গণ্য করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ঋণ খেলাপির বোঝা মাথায় নিয়ে নতুন ঋণের সন্ধানে আছে দেশটি। দিন দিন প্রয়োজনীয় পণ্যের অভাবে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। বিক্ষোভের পর বিক্ষোভ চলছে জ্বালানির জন্য। দিনের পর দিন জ্বালানির লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে মারা যাচ্ছেন অনেকে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কলম্বো গ্যাজেট বলছে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সকালে ৬০ বছর এক ব্যক্তি তেলের অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে মারা যান। জ্বালানি সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তেলের অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ১৫ জন মারা গেছেন।

গত ২৭ জুন জরুরী সেবা ব্যতিত অন্যান্য যানবাহনে পেট্রল ও ডিজেল বিক্রি বন্ধ করে শ্রীলঙ্কা সরকার। এরপর থেকে তিন চাকার গাড়ি চালকরা আন্দোলন করছেন। দিনের পর দিন পাম্পে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। জ্বালানি না পেয়ে অনেকেই ফিরে আসছেন, কেউ কেউ হারাচ্ছেন নিজের প্রাণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৭০ এর দশকে তেল সঙ্কটের পর প্রথম দেশ হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে পেট্রোল বিক্রি বন্ধ করার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এই দ্বীপরাষ্ট্রের আগে কোনো দেশ এমন সিদ্ধান নেয়নি। জ্বালানি বিক্রিতে স্থগিতাদেশের পর থেকে পাম্পগুলোতে দীর্ঘ সারি দেখা যায়। কয়েক কিলোমিটারজুড়ে জ্বালানির অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়ান বহু মানুষ।

সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সঙ্কটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ কমে এসেছে। ফলে ডলার ফুরিয়ে যাওয়ায় খাদ্য, ওষুধ ও জ্বলানির মতো প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে।

দেশটির স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জ্বালানি নির্ভর প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোসহ বেশ কয়েকটি বড় শহরে শত শত মানুষ জ্বালানি কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পাচ্ছে না। কখনো কখনো পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে তারা।

এদিকে মঙ্গলবার দেশের সংসদে আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশ্যে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহ বলেন, “দেশের ধসে পড়া অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা করা ‘কঠিন’ হয়ে পড়েছে। কারণ ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দ্বীপরাষ্ট্রটিকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে না দেখে দেউলিয়া দেশ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।”

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার জানান দিয়ে তিনি আরও বলেন, “চলতি বছরের শেষে আমাদের মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে দাঁড়াবে ৬০ শতাংশে। এটি এক কঠিন ও তিক্তা পথচলা হবে। তবে আমাদের স্বস্তি ফিরে আসবে, অগ্রগতিও ফিরে আসবে।”

Link copied!