• ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

ইমরানের বিরুদ্ধে ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’ তদন্তে কমিটি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২২, ০৮:১৮ পিএম
ইমরানের বিরুদ্ধে ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’ তদন্তে কমিটি

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’ তদন্ত করতে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান দেশের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী। তিনি বলনে, “বিরোধীদের দ্বারা প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দায়ের করা অনাস্থা প্রস্তাবের পিছনে ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।”

শুক্রবার (৮ এপ্রিল) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফাওয়াদ চৌধুরী এসব কথা বলেন।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ বলেন, “জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় নেতা শেহবাজ শরীফ ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রের’ চিঠিকে জাল বলে দাবি করেছেন। গঠিত কমিশ প্রমাণ করে দেখাবে এই চিঠির অস্তিত্ব আছে। কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) তারিক খান।”

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী জানান, যেসব ভিন্নমতাবলম্বী সংসদ সদস্য বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করছে তা তদন্ত করে ৯০ দিনের মধ্যে কমিশন রিপোর্ট পেশ করবে।

তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ বলেন, “আমাদের কাছে আটজন সংসদ সদস্যের তথ্য আছে। যারা বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এসব প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।”

ফাওয়াদ চৌধুরী পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থির সঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, “পাকিস্তান যদি নিজেদের স্বাধীনতা রক্ষা না করে, তাহলে এটি দাসত্বে ফিরে যাবে।”

বিদেশি মদদে সরকার গঠিত হলে সেটি কেমন হবে সেদিকেও ইঙ্গিত দেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “একটি ‘আমদানি করা নির্বাচিত সরকার’ দেশের বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া হবে। যা বিদেশ থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে। ফলে পাকিস্তান নিজের সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম হবে।”

এদিকে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ বলছে, ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’ তদন্তের জন্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) তারিক খানকে কমিশনের প্রধান করা হলেও তিনি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।

জেনারেল তারিক খানের পরিবারের সূত্র শুক্রবার জিও নিউজকে জানিয়েছে, কমিশনের প্রধান হতে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) খান তার সিদ্ধান্ত সরকারকে জানিয়ে দিয়েছেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে দেশের বিরোধী দলগুলো। রোববার এ প্রস্তাব খারিজ করে দেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৫ এর উল্লেখ করে ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি জানান, রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থাকা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক দায়িত্ব। সংবিধান ও আইনের প্রতি অনুগত থাকা নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক এবং পাকিস্তানে অবস্থান করা প্রত্যেকের জন্যই তা প্রযোজ্য।

ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যান বিরোধীরা। এর জেরে সৃষ্ট সংকটের প্রেক্ষাপটে স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) নোটিশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভির পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে মন্তব্য করেন পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত।

এছাড়া ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী পদে ও মন্ত্রিসভাকে পুনর্বহালের রায় দেন। সেই সঙ্গে শনিবার (৯ এপ্রিল) পার্লামেন্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

রায়ে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল বলেন, “জাতীয় স্বার্থ ও বাস্তব সম্ভাবনা দেখেই আদালত এগিয়ে এসেছেন। পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেওয়ার অধিকার নেই প্রধানমন্ত্রীর। এ সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।”

ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশ শাসনে অনিয়মের অভিযোগ এনে গত ৮ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দলগুলো। এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটির জন্য অধিবেশন ডাকতে স্পিকার আসাদ কায়সারের প্রতি লিখিত আবেদন জানান তারা।

Link copied!