এক ঐতিহাসিক মুহুর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছে উত্তর আয়ারল্যান্ড। যুক্তরাজ্যের অধ্যুষিত এই অঞ্চল ১০০ বছর ধরে ব্রিটিশ আধিপত্যের অধীন। তবে ব্রিটেনের এই নিয়ন্ত্রণ এবার হারাতে যাচ্ছে। দেশের সংসদীয় নির্বাচনে হেরে ক্ষমতা হারাতে যাচ্ছে ব্রিটেন নিয়ন্ত্রিত ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি। আর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করতে যাচ্ছে দেশের স্বাধীনতাকামী আয়ারল্যান্ড রিপাবলিকান আর্মির (আইআরএ) রাজনৈতিক শাখা।
শুক্রবার উত্তর আয়ারল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে দেখা যাচ্ছে, জাতীয়তাবাদী দল আরআইএর হয়ে ২৯ শতাংশ ভোট পেয়ে সবার শীর্ষে আছেন সিন ফেইন। আর ২১ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ব্রিটেন নিয়ন্ত্রিত ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি।
রয়টার্স বলছে, ১৯২১ সালের পর প্রথম কোনো আইরিশ জাতীয়তাবাদী দল সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। এত দিন ব্রিটেন নিয়ন্ত্রিত দলগুলোর দখলে ছিল আইরিশ সংসদ। ফলে ১০০ বছর পর দেশের সংসদের নিয়ন্ত্রণ নিতে যাচ্ছে জাতীয়তাবাদী কোনো দল।
ভোটসংশ্লিষ্ট পোল নিয়ে কাজ করা লুসিডটকের প্রধান নির্বাহী বিল হোয়াইট বলেন, “সিন ফেইন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া উত্তর আয়ারল্যান্ডের রাজনীতির জন্য ভূমিকম্পের সমতুল্য।”
তবে এখনই এই অঞ্চলে ব্রিটিশ আধিপত্যের পতন ঘটছে না। সিন ফেইনের বিজয় এই অঞ্চলের অবস্থার তেমন পরিবর্তন করবে না। কারণ, যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে গণভোট করতে হবে। সেটাও ব্রিটিশ সরকারের বিবেচনার ওপর নির্ভর করবে। তাদের সম্মতিতে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তা ছাড়া সম্ভব নয়।
কিন্তু এক শতাব্দী পর কোনো আইরিশ জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া একটা মাইলফলক, যা দেশের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে। ব্রিটিশপন্থী দলগুলোর আধিপত্য কমার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ আয়ারল্যান্ডের উত্তারঞ্চল অধিকাংশ মানুষ স্বাধীন প্রজাতন্ত্র চায়। শেষ পর্যন্ত ক্যাথলিক আইরিশ জাতীয়তাবাদী দলগুলো এই অঞ্চল শাসন করতে পারে।
আয়ারল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচনের এখনো তিন বছর বাকি। তার আগে উত্তরাঞ্চলের সিন ফেইনের জাতীয়তাবাদী দলের বিজয় অনেক বড় অর্জন। দলটি আয়ারল্যান্ডে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। তারা জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে প্রচারণা চালাচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি সফল ভিত্তি করছে আইআরএ।