কংগ্রেসের নেতা ও দলটির সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী লোকসভায় তার হারানো সদস্যপদ ফিরে পেতে পারেন। তবে সেজন্য উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের রায় প্রয়োজন হবে তার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদন এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, কেবল উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ যদি রাহুল গান্ধী যে মামলায় দুই বছর কারাদণ্ড পেয়েছেন সেই মামলার রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ বা স্টে অর্ডার দেন তবে রাহুল গান্ধী লোকসভার স্পিকারের কাছে তার সদস্যপদ ফেরত পাওয়ার আবেদন জানাতে পারবেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় দুই বছরের কারাদণ্ড প্রাপ্ত রাহুল গান্ধীর লোকসভার পদ শুক্রবার (২৪ মার্চ) বাতিল করেছেন স্পিকার ওম বিড়লা।
এক বিবৃতিতে লোকসভা জানিয়েছে, “রাহুল গান্ধী, লোকসভার কেরালার ওয়ানাড আসন থেকে, দণ্ড পাওয়ার দিন ২৩ মার্চ ২০২৩ সাল থেকে, ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)- অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নাম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ বাতিল করা হল।”
জনপ্রতিনিধি আইনের ৮(৩) উপধারায় বলা আছে, যখন লোকসভার কোনো সদস্য কোনো অপরাধে দুই বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য দণ্ড পান তাৎক্ষণিকভাবে তার সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়।
২০১৩ সুপ্রিম কোর্ট এক মামলার রায়ে জানিয়েছিলেন, কোনো মামলায় কোনো সংসদ সদস্য, বিধায়ক অথবা বিধান পরিষদের (বিধানসভার উচ্চকক্ষ) সদস্যের দুই বছর বা তার বেশি সময়ের সাজা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সদস্য পদ সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয়ে যাবে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিকাশ সিং বলেছেন, রাহুল গান্ধীকে খুব দ্রুত সবকিছু করতে হবে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন তার আাসনটি খালি ঘোষণা করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তার উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে এবং সাজার মেয়াদের ওপর স্থগিতাদেশ নিতে হবে।
বিকাশ সিং আরও বলেন, “যদি স্থগিতাদেশ পাওয়া যায় তবেই কেবল তিনি তার সদস্যপদ (লোকসভায়) ফেরত পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। তবে তার জন্য তাকে অতিদ্রুত আপিল বিভাগের শরণাপন্ন হতে হবে। তিনি যদি স্থগিতাদেশ পান তবেই কেবল তার আসনে কোনো উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।”
জ্যেষ্ঠ অ্যাডভোকেটে অজিত সিনহা বলেছেন, “উচ্চ আদালত তার সাজার আদেশ স্থগিত করতে পারেন এবং এর ধারাবাহিকতায় তিনি লোকসভায় তার আসন ফিরে পেতে পারে।”
এর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
মোদিকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘চৌকিদার চোর’। তিনি বলেছিলেন, ‘সব মোদিরা কেন চোর হয়’। ওই মন্তব্যের জেরে বিজেপি বিধায়ক ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পুরনেশ মোদি কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে দিয়েছিলেন।