ভারতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যোগদান নাও করতে পারে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ভারত ও চীনের একাধিক সূত্র সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, জিনপিং না এলেও চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে এ সম্মেলনে চীনের প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে জানিয়েছেন দুই ভারতীয় কর্মকর্তা। এই দুই কর্মকর্তার একজন চীনে দায়িত্ব পালনরত কূটনীতিক এবং অন্যজন জি-২০ জোটভুক্ত একটি দেশে কর্মরত রয়েছেন। তবে ভারত ও চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্ররা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
কিয়োডোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লি কিয়াং আগামী ৫-৭ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনেও যোগ দিতে পারেন।
এদিকে, জি-২০ সম্মেলনে যোগদানের কথা নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাই এই সম্মেলনকে এমন একটি স্থান বলে মনে করা হয়েছিল যেখানে বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন জিনপিং। কারণ বাণিজ্য এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনাসহ নানা কারণে এই দুই বৈশ্বিক পরাশক্তির মধ্যে অস্থিতিশীলতা থাকলেও, উভয় দেশ সেই সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে চায়।
গতবছরের নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন শি জিনপিং। এটিই ছিল তাদের দুজনের সর্বশেষ দেখা।
এদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি জি-২০ সম্মেলনে যোগদানের জন্য নয়াদিল্লিতে যাবেন না। এর পরিবর্তে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভকে ভারতে পাঠাবেন।
আয়োজক দেশ ভারতের একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, "প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পরিববর্তে প্রিমিয়ার লি কিয়াং এখানে আসবেন সে বিষয়ে আমরা অবগত আছি।"
চীনে অবস্থানরত দুই বিদেশি কূটনীতিক এবং জি-২০ জোটভুক্ত অন্য একটি দেশের একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, শি জিনপিং সম্ভবত এই সম্মেলনের জন্য ভারতে যাবেন না।
উল্লিখিত তিনটি সূত্রের মধ্যে দুজন বলছেন, সম্মেলনে জিনপিংয়ের না যাওয়ার সম্ভাবনা থাকার বিষয়টি চীনা কর্মকর্তারা তাদের অবহিত করেছেন, কিন্তু চীনা প্রেসিডেন্টের প্রত্যাশিত এই অনুপস্থিতির কারণ সম্পর্কে তারা অবগত নন।
এই সকল কর্মকর্তারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারণ এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি নেই তাদের।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে একের পর এক শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তাদের বেইজিং সফরের কারণে জিনপিং ও বাইডেনের মধ্যে সাক্ষাতের প্রত্যাশা আরও জোরাল হয়েছে। এমনকি চলতি সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রী জিনা রাইমন্ডো চীন সফরে গিয়েছিলেন।
এছাড়াও দুই নেতার মুখোমুখি আলোচনার জন্য আরেকটি সুযোগ অপেক্ষা করে আছে, তা হলো আগামী ১২-১৮ নভেম্বর সান ফ্রান্সিসকোতে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন লিডারস মিটিং।
চলতি বছরে চীন মহামারির কারণে দেওয়া সীমান্তের কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর থেকে কয়েকবার বৈদেশিক সফরে গিয়েছেন জিনপিং। গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলন ২০২৩-এও যোগদান করেছেন তিনি।
শি জিনপিং এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জোহানেসবার্গে ব্রিকস বৈঠকের ফাঁকে একটি বিরল আলোচনায় বসেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উত্তেজনা কমানোর বিষয়ে আলোচনা করেন।