• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সম্পত্তি লিখে নিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মার হাতে দিল ভিক্ষার থালা, অতঃপর ...


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৪, ০১:৩২ পিএম
সম্পত্তি লিখে নিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মার হাতে দিল ভিক্ষার থালা, অতঃপর ...

বাবা-মার কাছ থেকে ছলেবলে সব সম্পত্তি লিখে নিয়েছিল সন্তানেরা। এরপর খাবার, আশ্রয় চাইলে তারা হাজারিরাম বিষ্ণোই (৭০) ও তার স্ত্রী চাওয়ালী দেবীর (৬৮) হাতে ভিক্ষার থালা ধরিয়ে দেয়। রাগে-দুঃখে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ওই দম্পতি। মৃত্যুর আগে দুই পৃষ্ঠার একটি সুইসাইড নোটও লিখে রেখে গেছেন তারা।

এতে লেখা রয়েছে, নিজ ছেলেমেয়ে এবং মেয়ের স্বামীরা মিলে তাদের অন্তত পাঁচবার মারধর করেছেন। শুধু মারধরই নয়—হত্যার হুমকি দেওয়া, খাবার খেতে না দিয়ে ভিক্ষা করতে বলার মতো জঘন্য আচরণ করা হয়েছে তাদের সঙ্গে।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) তাদের মরদেহ বাড়ির পানির ট্যাংকে পাওয়া যায়। ওই সময় তাদের ঘরের দেওয়ালে দুই পাতার ওই সুইসাইড নোটটিও উদ্ধার করে পুলিশ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থান রাজ্যের নাগৌরে। পুলিশ জানিয়েছে, দুই পৃষ্ঠার ওই সুইসাইড নোটে বৃদ্ধ দম্পতি তাদের সন্তানদের আচরণ এবং তাদের সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের নাম লিখে গেছেন।

খবরে বলা হয়েছে, হাজারিরাম ও চাওয়ালী দেবীর ছেলেরা ও তাদের স্ত্রীরা অন্তত পাঁচবার তাদের মারধর করেছে। কেবল তাই নয়, তারা এই দুজনকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিল এবং তাদের খাবার দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে চাওয়ালী দেবীকে ‘একটি থালা দিয়ে ভিক্ষা করতে বলেছে।’

এই দম্পতির চার সন্তান দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। মৃত্যুর আগে বাড়ির দেওয়ালে সাঁটিয়ে যাওয়া সুইসাইড নোটে এই দম্পতি বলেছেন, তাদের এক ছেলে রাজেন্দ্র তাদের তিনবার মারধর করেছে এবং অপর ছেলে সুনীল তা করেছে দুবার। সুইসাইড নোটে তারা আরও লিখে গেছেন, তাদের ছেলে-মেয়েরা হুমকি দিয়ে বলেছিল, বেশি কথা না বলতে এবং অভিযোগ দায়ের না করতে। এমনটা করলে তারা তাদের ঘুমের মধ্যে মেরে ফেলবে।

নোটে আরও বলা হয়েছে, রাজেন্দ্র ও তার স্ত্রী রশ্মি; সুনীল, তার স্ত্রী অনীতা ও ছেলে প্রণব এবং ওই বৃদ্ধ দম্পতির দুই মেয়ে মঞ্জু ও সুনিতাসহ আরও কয়েকজন আত্মীয় তাদের নামে থাকা সব সম্পত্তি লিখে নিতে চেয়েছিল এবং আত্মীয়রা যেকোনো উপায়ে তা করতে তাদের প্ররোচিত করেছিল। এতে আরও বলা হয়, দম্পতির চার সন্তান এরই মধ্যে প্রতারণা করে এবং ঝগড়া করে তিনটি প্লট এবং একটি গাড়ির মালিকানা লিখে নিয়েছিল। নোট অনুসারে, রাজেন্দ্র, মঞ্জু এবং সুনিতা মিলে গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছে এবং সুনীল ও তার স্ত্রী অনীতা কর্নি কলোনিতে একটি বাড়ি দখল করেছে।

সুইসাইড নোটে আরও বলা হয়েছে, বৃদ্ধ ওই দম্পতির কাছ থেকে এসব নেওয়ার পর তাদের সন্তানেরা তাদের খাবার দিতে অস্বীকার করে এবং প্রতিদিন ফোনে তাদের গালাগালি করত। সুনীল তাদের ডেকে বলেছিল, ‘এই থালা নাও, খাবারের জন্য ভিক্ষা করো। আমি তোমাদের খাবার দেব না এবং কাউকে বললে তোমাদের মেরে ফেলব।’

নাগৌরের পুলিশ সুপার নারায়ণ তোগাস বলেছেন, তারা বৃহস্পতিবার খবর পান যে, হাজারিরাম ও চাওয়ালীর দেবীর বাড়িতে কোনো লোকজনের কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। পরে পুলিশ গিয়ে তল্লাশি চালানোর পর পানির ট্যাংকের মধ্যে তাদের মরদেহ পায়।

নারায়ণ তোগাস বলেন, “হাজারিরামের পকেটে বাড়ির চাবি পাওয়া যায় এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। আমরা বাড়ির ভেতরে একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও রেকর্ডিং খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। মরদেহ দুটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে।”

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!