বিশ্বের বড় বড় খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ আয়ের দেশের তুলনায় দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বিক্রি করছে কম স্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্য। যে তালিকায় রয়েছে নেসলে, ইউনিলিভার, পেপসিকোর মতো কোম্পানির পণ্যও।
অ্যাক্সেস টু নিউট্রিশন ইনিশিয়েটিভ (এটিএনআই)-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে তৈরি করা রেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে বিশ্বের নামিদামি ৩০টি প্রতিষ্ঠানের পণ্যের ওপর জরিপ চালিয়ে অস্বাস্থ্য খাদ্যপণ্য বিক্রির প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হেলথ স্টার (স্বাস্থ্যকর খাবারের) রেটিং সিস্টেমে পণ্যগুলো সবচেয়ে ভালো পণ্যের মান ৫ ও ৩.৫ এর উপরে স্কোরকে স্বাস্থ্যকর হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তবে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর পোর্টফোলিও সিস্টেমে সেই খাবারের মান ১.৮ রেটিং পেয়েছে। উচ্চ আয়ের দেশগুলিতেও কিছু পণ্য পরীক্ষা করে সেগুলোর মান ২.৩ পেয়েছিল।
এটিএনআই-এর গবেষণা পরিচালক মার্ক উইন বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “এটা খুবই স্পষ্ট যে এসব কোম্পানি বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে, যেখানে তারা বেশি সক্রিয়, সেখানে যা বিক্রয় করছে, সেগুলো স্বাস্থ্যকর পণ্য নয়।”
এটিএনআই-এর গবেষণা পরিচালক আরও বলেন, “এই দেশগুলোর সরকারদের সচেতন হওয়ার জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা। এবারই প্রথম সূচকটি তাদের মূল্যায়নকে নিম্ন ও উচ্চ আয়ের দেশে বিভক্ত করেছে। খাদ্যের এই মানের সঙ্গে স্থূলতার সম্পর্কও রয়েছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী একশ কোটিরও বেশি মানুষ ওবিসিটি, অর্থাৎ স্থূলতায় আক্রান্ত। বিশ্ব ব্যাংকের হিসেবে, অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় আক্রান্ত শতকরা ৭০ ভাগ মানুষ নিম্ন ও মাধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বসবাস করেন।
প্রতিবেদন বিষয়ে নেসলের এক মুখপাত্র বলেন, “আমরা আমাদের আরও পুষ্টিকর খাবারের বিক্রয় বাড়ানোর পাশাপাশি মানুষকে আরো ভারসাম্যপূর্ণ খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
তবে পেপসিকোর মুখপাত্র এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। কোম্পানিটি গত বছর আলুর চিপসে সোডিয়ামের পরিমাণ কমাতে ও তার খাবারে গোটা শস্যের মতো উপাদান যুক্ত করার জন্য নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল।