যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রচারণার সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় বিশ্বনেতারা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। রাজনৈতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীরা। হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহানুভূতিও প্রকাশ করেছেন তারা।
ট্রাম্পের ওপর হামলা প্রসঙ্গে বিভিন্ন দেশের নেতাদের বক্তব্য তুলে ধরা হলো—
রোববার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার বলেছে, “নির্বাচনী সমাবেশে ‘মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত’ হয়েছেন তিনি। স্টারমার আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই।”
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “ট্রাম্পের ওপর হামলায় সারা (তার স্ত্রী) ও আমি হতবাক হয়েছি। আমরা তাঁর নিরাপত্তা ও দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করি।”
হামলার ঘটনাটিকে ‘অন্ধকার সময়’ বলে উল্লেখ করে ট্রাম্পের প্রতি সমবেদনা জানান হাঙ্গেরির জাতীয়তাবাদী নেতা ভিক্টর অরবান।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, তিনি পেনসিলভানিয়া থেকে ‘উৎকণ্ঠা’ নিয়ে ঘটনার আপডেটগুলো অনুসরণ করছেন এবং ট্রাম্পের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। তিনি আশা করছেন, পরবর্তী মাসগুলোতে নির্বাচনী প্রচারণায় ঘৃণা ও সহিসংতার বদলে সুস্থ সংলাপ ও দায়িত্ব জয়লাভ করবে।
তবে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলেই ঘটনাটির জন্য ‘আন্তর্জাতিক বামদের’ দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনে পরাজয়ের আতঙ্কে তারা তাদের পশ্চাৎপদ ও স্বৈরাচারী এজেন্ডা চাপিয়ে দিতে সন্ত্রাসের আশ্রয় নিচ্ছে।”
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেছেন, “গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক সংলাপের রক্ষকদের এই গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা করা উচিত।”
কোস্টারিকার সরকারও এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “সরকার ঘটনটির হালনাগাদ তথ্য অনুসরণ করছে। গণতন্ত্র ও শান্তির নেতা হিসেবে আমরা সব ধরনের সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করি।”
চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক গুলি চালানোর ঘটনায় ‘তীব্র নিন্দা’ জানিয়েছেন। বোরিক বলেছেন, “সহিংসতা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি এবং একসঙ্গে আমাদের জীবনকে দুর্বল করে দেয়। আমাদের সবাইকে অবশ্যই তা প্রত্যাখ্যান করতে হবে।”
চিলির রাষ্ট্রপতি গ্যাব্রিয়েল বোরিক বলেন, সহিংসতা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। সেই সঙ্গে আমাদের জীবনকে দুর্বল করে। আমাদের সবাইকে এটা প্রত্যাখ্যান করতে হবে।’
বলিভিয়ায় প্রেসিডেন্ট লুইস আর্স বলেন, “আমাদের গভীর মতাদর্শগত ও রাজনৈতিক পার্থক্য সত্ত্বেও যেখানেই সহিংসতা হোক না কেন, সবাই এর নিন্দা করা উচিত।’ জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেন, ‘গণতন্ত্রবিরোধী যেকোনো সহিংসতার বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিবাদ করা উচিত। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্রুত আরোগ্যের প্রার্থনা করি।”
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজ হামলাকে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ট্রাম্প গুরুতর আহত হননি বলে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তিনি। অ্যালবানিজ আরও বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই।
চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক গুলি চালানোর ঘটনার ‘তীব্র নিন্দা’ জানিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস লুক্সন একই ধরনের মন্তব্যের প্রতিধ্বনি করে করেছেন, ‘কোনো দেশের এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার সম্মুখীন হওয়া উচিত নয়।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাস্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী প্রচারণায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলিতে তাঁর ডান কানের ওপরের অংশে ফুটো হয়ে গেছে। এ ঘটনায় বন্দুকধারী ও আরেকজন রিপাবলিকান সমর্থক নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে দুজন সন্দেহভাজন আহত হয়েছেন।
তথ্যসূত্র: বাসস