বিষ প্রয়োগের ২৯ বছর পর মারা গেলেন ঝু লিং। তবে মৃত্যুর আগে জানতে পারেননি কে বা কারা কেন তার শরীরে বিষ প্রয়োগ করেন।
২৯ বছর আগে ২০ বছর বয়সী ঝু লিং বেইজিংয়ের সিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সেসময় তার শরীরে ভয়ংকর রাসায়নিক থ্যালিয়াম বিষ প্রয়োগ করা হয়। যার কারণে ঝু লিংয়ের বাম দিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়। মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রায় অন্ধ হয়ে যান তিনি। এ কারণে দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে মা-বাবা ২৪ ঘণ্টাই তার বিশেষ যত্ন নিতেন।
১৯৯৪ সালে এ ঘটনাটি ঘটে। তবে এ ঘটনায় মামলা করা হলেও সেটি এখনো অমীমাংসিত রয়েছে। কে, কীভাবে, কেন বিষ প্রয়োগ করেছে তা জানার আগেই শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) ৫০ বছর বয়সে লিং মারা যান।
বিষ প্রয়োগের এ ঘটনায় মামলা করা হলেও কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি। এ বিষয়ে ঝু লিংয়ের সহপাঠী ও তৎকালীন রুমমেট সান ওয়েইর বিরুদ্ধে তদন্ত হলেও, তাকে অভিযুক্ত করা হয়নি।
১৯৯৪ সালের শেষের দিকে বিষ প্রয়োগের কারণে ঝু লিংয়ের পেটে ব্যথা ও চুল পড়া শুরু হয়। এর কয়েক মাস পর তিনি কোমায় চলে যান। পরে চিকিৎসকরা তার শরীরে থ্যালিয়াম বিষক্রিয়ার অস্তিত্ব পান। এই বিষ নরম একটি ধাতু, যা পানিতে সহজেই দ্রবীভূত হয় এবং গন্ধ ও স্বাদহীন।
একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, থ্যালিয়াম রাসায়নিক রাখার জায়গাটিতে যাওয়ার অনুমতি ছিল লিংয়ের সহপাঠী সানের। তবে তিনি ওই অনুমতি পাওয়া একমাত্র শিক্ষার্থী নন। এই অনুমতি আরও শিক্ষার্থীর ছিল বলে জানান সান।
ঝু লিংয়ের পরিবার ও বন্ধুরা জানান, তার সৌন্দর্য, সংগীত প্রতিভা ও শিক্ষাগত কৃতিত্বের জন্য ঈর্ষান্বিত হয়ে এ কাজ করেছেন সান। তবে ঝু লিংয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতার কথা অস্বীকার করেন সান। পরে সান যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাকে সেই দেশ থেকে বের করে দেওয়া দাবি জানানো হয়। ওই পিটিশনে সানের পরিবারের শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে বলে বর্ণনা করা হয়। আরও অভিযোগ করা হয়, তার বিষাক্ত রাসায়নিকের কাছে যাওয়ার অনুমতি ছিল এবং তার উদ্দেশ্য খারাপ ছিল।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, সানের দাদা সান ইউইকি একজন জ্যেষ্ঠ চীনা কর্মকর্তা। সে কারণেই সান বেঁচে গেছেন। এ ছাড়া বেইজিংয়ের সাবেক ভাইস মেয়র সানের আত্মীয়। সূত্র: বিবিসি