ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আড়াই হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। যদিও এটি রাজ্য সরকারের তথ্য নয়। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, এমন পরিস্থিতিতে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। নয়তো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে মশাবাহিত এ রোগ।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। তবে ডেঙ্গু সমস্যা আসছে প্রধানত বাইরে থেকে। মমতা বলেন, “বাংলাদেশ থেকে আসছে। বেশি পাওয়া গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা ইত্যাদি এলাকায়।”
এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দুই পর্যায়ে বৈঠক করেছে রাজ্য সরকার। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সর্বস্তরে ডেঙ্গু প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার প্রস্তুতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখতে হবে। সঙ্গে থাকবে এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখা এবং সচেতনতা প্রচারের কাজ। সরকারি হাসপাতালে বিনা খরচে ডেঙ্গু পরীক্ষার সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, হাসপাতালের সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। পরে বিকালে জেলা-কর্তাদের সঙ্গে পৃথক ভাবে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও। এসব বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতিটি হাসপাতালে সর্বোচ্চ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক ‘ফিভার ক্লিনিক’ চালু রাখা, কেউ জ্বর নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছালে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। এছাড়া দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করে তার ফলাফল পাওয়া নিশ্চিত করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, হাসপাতালগুলা এবং ব্লাড ব্যাঙ্কে অণুচক্রিকার (প্লাটিলেট) সংগ্রহে যাতে কোনো ঘাটতি না থাকে।
এদিকে মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি পৌরসভা এলাকায় পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। ১২৯টি পৌরসভা এলাকায় প্রতি সপ্তাহে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পদ্ধতি ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে। একই ভাবে চলবে মশার লার্ভা ধ্বংস করা কার্যক্রমও এগুচ্ছে বেশ জোরেশোরে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রতিটি পৌর এলাকায় ৬২৪টি বিশেষ দল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। মশার লার্ভা নষ্ট করার জন্য জেলাগুলোকে বিশেষ মাছ দেওয়া হয়েছে।