যত দিন যাচ্ছে, জেন জি প্রজন্মের লোকজন আরও বেশি করে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিচ্ছেন। তবে যেসব কোম্পানি জেন জি প্রজন্মের লোকজন নিয়োগ দিচ্ছে তারা এই প্রজন্ম নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ জেন-জি রা অন্য প্রজন্মের কর্মীদের তুলনায় দ্রুত গতিতে চাকরি হারাচ্ছে। এবিষয়ে সম্প্রতি এক গবেষণা হয়। গবেষণা শেষে কর্মী এবং নিয়োগকর্তাদের সামনের চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে কিছু তথ্য দিয়েছে গবেষকরা।
কর্মস্থলে খাপ খাওয়াতে না পারা
গবেষণায় দেখা যায়, জেন-জি রা প্রতিনিয়ত কর্মস্থলের সাধারণ গতির সঙ্গে তাল মেলানো চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে ইন্টেলিজেন্ট ডটকমের চিফ এক্সিকিউটিভ এন্ড কেরিয়ার ডেভলেপমেন্ট এডভাইজার হুয়ি এন বলেছেন, এই তরুণ পেশাদারদের যে শিক্ষা ব্যবস্থা তার মাধ্যমে তাত্ত্বিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে, কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতার অভাব থাকে। কিন্তু এই অভিজ্ঞতায় কর্মক্ষেত্রে সফল হতে প্রয়োজন।” একটি কাঠামোবদ্ধ শিক্ষামূলক পরিবেশ থেকে একটি পরিবর্তিত কাজের পরিবেশে স্থানান্তর এই প্রজন্মের জন্য বিরক্তিকর হতে পারে।
পেশাদারিত্ব এবং দক্ষতার অভাব
আরেকটি বিষয় যা এই গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে তা হল, জেন জেড কর্মচারীদের মধ্যে পেশাদারিত্বের অভাব। গবেষণার অনুযায়ী,নিয়োগকর্তাদের প্রায় ৪৬% মনে করেন যে এই কর্মচারীদের পেশাদারিত্বের অভাব। তারা যোগাযোগ এবং কর্মস্থলের শিষ্টাচার সহ মূল ক্ষেত্রগুলিতে গুরুত্ব কম দিচ্ছে। সহযোগিতামূলক পরিবেশে থেকেও অত্যাবশ্যকীয় দক্ষতার চাহিদাগুলি অনেক তরুণ কর্মীর জন্য একটি বাঁধা হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
এই বিষয় নিয়ে মানবসম্পদ পরামর্শদাতা ব্রায়ান ড্রিস্কল ব্যাখ্যা করেছেন যে, আধুনিক শিক্ষায় তাত্ত্বিকতার ওপর খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং বাস্তব, পেশাদার দক্ষতার ওপর পর্যাপ্ত জোর দেওয়া হয় না।
মনোযোগের অভাব এবং উচ্চ প্রত্যাশা
ডিজিটাল যুগে বড় হওয়া জেন জেডের বিশ্বের সঙ্গে যেভাবে তাল মেলাচ্ছে তার প্রভাব কর্মক্ষেত্রে পড়ে। নিয়োগকর্তারা রিপোর্ট করেছেন যে, এই প্রজন্মের কর্মীরা মনোযোগী কম কিন্তু প্রত্যাশা বেশি। তাই কিছু পুরোনো ম্যানেজার তাদের “হাই মেন্টেনেন্স” তকমা দিতে শুরু করেছেন।
একটি প্রজন্মের অমিল?
গবেষণাটিতে জেন জেড কর্মচারীদের নিয়ে পাওয়া তথ্যে সব বিশেষজ্ঞ একমত নন। তারা মনে করেন না সব সমস্যার মূলে জেন জি। কালচার পার্টনার্সের চিফ স্ট্রেটিজি অফিসার জেসিকা ক্রিগেল বলেন, এই সমস্যা গুলি ভুল বোঝাবুঝির লক্ষণ হতে পারে। তিনি স্বীকার করেন যে “তরুণ কর্মচারীদের নিয়ে যে স্টেরিওটাইপ আছে তা নতুন নয়। এবং একজন দুর্দান্ত কর্মচারী হবার জন্য যা গুরুত্বপূর্ণ তা হল তাদের মূল্যবোধ এবং অভিজ্ঞতা।”
কী করা যেতে পারে?
এই সমস্যা সমাধানে যা করা যেতে পারে তা হলো জেন জেড কর্মচারীদের প্রত্যাশা এবং কর্মস্থলের বাস্তব পরিবেশের মধ্যে ব্যবধান কমানো। ইলেকট্রো সফ্ট ইনক. এর সিইও কার্লা ট্রটম্যান বলেন, যদি শিল্প কারখানাগুলো দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকতে চায় তবে, তাদের তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার জন্য অভিযোজিত হতে হবে।
সবশেষে বলা যায়, সফল হবার জন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো এবং নতুন প্রজন্ম উভয়কে পরিবর্তন হতে হবে। প্রয়োজনে উন্নত প্রশিক্ষণ এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিই কোম্পানিগুলোকে ভালো কর্মী পেতে সহয়তা করবে। সূত্র: দ্য হার্টিসোল।