বিশ্বের সর্বাধিক বাসযোগ্য ও উন্নত দেশগুলোর অন্যতম নিউজিল্যান্ড ছাড়ছেন হাজার হাজার তরুণ। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ৩১ হাজার নাগরিক নিউজিল্যান্ড ত্যাগ করেছেন। যাদের বেশিরভাগই অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছেন।
পরিসংখ্যান এনজেড-এর আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, নিউজিল্যান্ড ত্যাগ করার ঘটনা সর্বাধিক মানুষের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। বুধবার (১২ জুন) পরিসংখ্যান এনজেড অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে অভিবাসন সংক্রান্ত অস্থায়ী ডেটাও প্রকাশ করেছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত যে এক লাখ ৩০ হাজার ৬০০ নাগরিক নিউজিল্যান্ড ত্যাগ করেছেন তাদের মধ্যে ৮১ হাজার ২০০ জন ছিলেন নিউজিল্যান্ডের নাগরিক। আগের বছরের চেয়ে চলতি বছরে দেশ ছাড়ার সংখ্যা ৪১ শতাংশ বেড়ে গেছে। এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নাগরিকদের ৫৩ শতাংশই নিউজিল্যান্ড ছেড়ে চলে গেছে অস্ট্রেলিয়ায়।
নিউজিল্যান্ডের তরুণদের জন্য স্কুল বা উচ্চশিক্ষা শেষ করার পর বিদেশে যাওয়া একটি সাধারণ ব্যাপার। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিউজিল্যান্ডের তরুণ পেশাদার ও স্নাতকরা জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় এবং চাকরির ঘাটতির কারণে দেশ ছেড়েছেন।
নিউজিল্যান্ডের তরুণদের দেশ ছাড়ার পেছনে দুটো প্রধান কারণ শনাক্ত করেছেন ইনফোমেট্রিক্স-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ ব্র্যাড ওলসেন। তিনি মনে করছেন, তরুণরা বিদেশের অভিজ্ঞতা অর্জনে দেশ ছাড়ছেন। তাছাড়া অনেকেই ভালো সুযোগের জন্য স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়া চলে যাচ্ছেন।
পরিসংখ্যান এনজেড-এর পপ্যুলেশন ইন্ডিকেটরস ম্যানেজার তাহসিন ইসলাম বলেন, “অন্যান্য দেশের তুলনায় নিউজিল্যান্ডের মানুষদের দেশ ছাড়ার পেছনে প্রধান কারণ অর্থনীতি এবং চাকরি সংকট।”
অস্ট্রেলিয়ায় কাজের বেতন ভালো হওয়ায় এবং কাজের মান ভালো থাকায় নিউজিল্যান্ডের শ্রমিকরাও অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন। অর্থনীতিবিদ ব্র্যাড ওলসেন বলেন, “নিউজিল্যান্ডবাসীদের চলে যাওয়া স্বাভাবিক হলেও আবাসনের সামর্থ্য এবং চাকরির সম্ভাবনা নিয়ে চলমান সমস্যায় তারা ফিরে আসার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায় না।”
ব্র্যাড ওলসেন মনে করেন, এই প্রবণতা নিউজিল্যান্ডের জনসংখ্যার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা তৈরি করতে পারে। সেই সঙ্গে উদ্ভাবন ও উৎপাদনশীলতা হ্রাস করতে পারে। ওলসেন বলেন, “আমাদের তরুণদের থাকতে হবে এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখতে হবে। তরুণ প্রতিভা হারানো সবকিছুই কঠিন করে তোলে।”