খালিস্তান আন্দোলনের নেতা হারদীপ সিং নিজ্জারকে (৪৫) ১৮ জুন কানাডায় একটি শিখ মন্দিরের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে কানাডা ভারতের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। ইতিমধ্যে দেশ দুটি পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার করেছে। যার জন্য এতে ঘটনা অর্থাৎ হারদীপ সিং নিজ্জার এবং খালিস্তান আন্দোলন সম্পর্কে তুলে ধরা হলো।
খালিস্তান আন্দোলন
১৯৪৭ সালে ভারত ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জনের সময়ে খালিস্তান আন্দোলনের সূচনা হয়। শিখদের জন্য একটি পৃথক ভূখণ্ডের দাবি জানানো হয় এ আন্দোলনের মাধ্যমে।
শিখরা ভারতের একটি ধর্মীয় সংখ্যালঘু, যারা দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশ।
উত্তর ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে ১৯৮০-এর দশকে আন্দোলনটি তীব্র আকার ধারণ করে। যাতে বেশ কয়েকটি সহিংস আক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
পরবর্তী সময়ে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী খালিস্তান আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালানোর পর এটি গতি হারিয়ে ফেলে। তবে প্রবাসী শিখ সম্প্রদায়ের খালিস্তান সমর্থকরা একটি পৃথক রাষ্ট্রের জন্য তাদের আহ্বান অব্যাহত রাখে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তীব্র হয়েছে।
ভারত খালিস্তান আন্দোলনের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে। দেশটির সব মূলধারার রাজনৈতিক দল সহিংসতা ও বিচ্ছিন্নতাবাদের নিন্দা করেছে।
হারদীপ সিং নিজ্জার
হারদীপ পাঞ্জাবের জলন্ধরের ভরসিংহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে কানাডায় চলে যান। সেখানে প্রথমে তিনি পানির মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন। পরে পশ্চিম কানাডিয়ান প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার একজন বিশিষ্ট শিখ নেতা হয়ে ওঠেন।
খালিস্তান টাইগার ফোর্সের সঙ্গে তার কথিত যোগসূত্রের জন্য ২০২০ সালে ভারত তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেছিল। খালিস্তান টাইগার ফোর্স হলো ভারতের পাঞ্জাব অঞ্চলে স্বাধীন খালিস্তানের পক্ষে প্রচারণা চালানো একটি দল।
নিজ্জারের সমর্থকরা এই অভিযোগগুলোকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছ এবং বলে যে নিজ্জার তার কাজের জন্য অতীতেও হুমকির লক্ষ্যবস্তু হয়েছিলেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, নিজ্জার মৃত্যুর আগে স্বাধীন শিখ রাষ্ট্রের জন্য ভারতে একটি বেসরকারি গণভোট আয়োজনের জন্য কাজ করছিলেন।
নিজ্জার হলেন তৃতীয় বিশিষ্ট শিখ ব্যক্তিত্ব, যিনি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অপ্রত্যাশিতভাবে মারা গেছেন।