ইসরায়লে হামলা চালানোর সময় মার্কিন বিমান ও নৌবাহিনী বেশ কয়েকটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করে। প্রায় ৮০টিরও বেশি ড্রোন এবং কমপক্ষে ছয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইরাকের উপর দিয়ে ভূপাতিত করে মার্কিন বিমান ও জাহাজ বা বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী। ইরানের হামলার এভাবে জবাব দেয়ার জন্য মনে হতেই পারে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষে যুদ্ধ হলে তাতে জড়িয়ে যেতে পারে।
কিন্তু তা নয়। ইরান প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর সময়, তাদের প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত হয়েছিল বা বাধা দেওয়া হয়েছিল - যা মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের উপর ইসরায়েলি সামরিক শ্রেষ্ঠত্বের চিহ্ন হিসাবে দেখছে। হামলায় ইসরায়েলের দিকে একযোগে প্রায় ১০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে আসছিল। তখনকার সেই তুমুল উত্তেজনার মধ্যেই বাইডেন ও নেতানিয়াহুর মধ্যে আলাপ হয়। তারপরও ইসরায়েল যদি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় তাতে অংশ নেবে না যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থানই জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
রোববার (১৪ এপ্রিল) মার্কিন প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছন যে, মি. বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে “খুব সাবধানে এবং কৌশলীভাবে চিন্তা করতে” বলেছেন। আর সে কারণেই ইসরায়েলকে সতর্ক করে হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়েছে, ইরানের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক হামলায় অংশ নেবে না যুক্তরাষ্ট্র।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলে রাতারাতি ৩০০টিরও বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে তেহরান। তবে লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই প্রায় সব ক্ষেপণাস্ত্রই ভূপাতিত করেছে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রবাহিনী। এক্ষেত্রে ইসরায়েলকে যে কোনো পাল্টা জবাব দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন জো বাইডেন।
এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা আরও বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন বিশ্বাস করে যে ইসরায়েল এর বিনিময়ে “সেরাটাই পেয়েছে”, যার শুরু হয়েছিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলায় সিনিয়র ইরানি সামরিক কমান্ডারদের হত্যার মাধ্যমে।
মার্কিন টেলিভিশনে নেটওয়ার্কগুলোয় মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি বারবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে যে তারা বড় ধরনের সংঘাত এড়াতে চায়। প্রশাসনের শীর্ষ সূত্র জানিয়েছে, কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ইরানে একই বার্তা পাঠানো হয়েছে। মি. কারবি এবং এর কর্মকর্তা উভয়েই বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে রক্ষা করতে থাকবে, তবে ইসরায়েলের কোনও প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তাদের এই অবস্থান নিয়ে কিছু মার্কিন আইন প্রণেতা এবং উভয় রাজনৈতিক দলের প্রাক্তন কর্মকর্তারা সমালোচনা করেছেন।