যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র চারদিন বাকি। এর মধ্যেই হঠাৎ করে রিপাবলিকান প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিলেন। যেখানে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বর্বর হামলার শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করলেন।
স্থানীয় সময় ৩১ অক্টোবর ট্রাম্প তার মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে দেওয়া পোস্টে লেখেন, “বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বর হামলার কড়া নিন্দা জানাচ্ছি। যারা উচ্ছৃঙ্খল জনতার দ্বারা হামলা ও লুটের শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে।”
ট্রাম্পের এই পোস্ট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের সমর্থকরা ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আর ক্ষমতাচ্যুৎ সরকারের সমর্থকরা ট্রাম্পের পোস্ট পড়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ছেন। তবে অনেকেই বলছেন, নির্বাচনী কৌশল আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয় ভোটারদের দৃষ্টি কাড়তেই তিনি এমন পোস্ট দিয়েছেন।
কারণ হিসেবে অনেকে বলছেন, ট্রাম্প তার পোস্টে দাবি করেছেন তিনি যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকতেন তাহলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের ঘটনা ঘটত না। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে যে ট্রাম্প সংখ্যালঘু ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন তা নিশ্চিত।
সামাজিকমাধ্যমে অনেকেই মতামত দিচ্ছেন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান ও হিন্দু ভোটারদের ভোট টানতেই কৌশলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন ট্রাম্প। তাছাড়া শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত বিরামহীনভাবে অভিযোগ করছে বাংলাদেশে ব্যাপকহারে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে।
ভারতের সেই ভাষ্যের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে ট্রাম্প মূলত ভোটারদেরই আকৃষ্ট করতে চেয়েছেন। তবে অনেকেই বলছেন, বাংলাদেশ নিয়ে নির্বাচনের আগেই ট্রাম্পের এমন অভিযোগ তার নীতির বিষয়টাই প্রকাশ পাচ্ছে। বলা যায়, ট্রাম্প নির্বাচনে জয় লাভ করলে বাংলাদেশের ব্যাপারে তার নীতি কী হবে তা এ পোস্ট স্পষ্ট করেছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে হিলারী ক্লিনটনসহ ডেমোক্র্যাটদের সুসম্পর্ক রয়েছে। বিপরীত দিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রামের সঙ্গে ভারত ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভালো সম্পর্ক। ফলে ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে তার পররাষ্ট্রনীতিতে এই সুসম্পর্ক প্রভাব ফেলবে।
ট্রাম্পের অভিযোগ, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো বিশ্বে হিন্দুদের উপেক্ষা করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পোস্টের শেষে বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে লিখেছেন, “নির্বাচিত হলে আমার প্রশাসনের মাধ্যমে ভারত এবং ভালো বন্ধু নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শক্তিশালী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ব।” পোস্টে তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দীপাবলির শুভেচ্ছাও জানান।