রাজনৈতিক জীবনে প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়া সফরে গেলেন টানা দুই যুগ ধরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের পদে থাকা বিশ্বের আলোচিত নেতা ভ্লাদিমির পুতিন। তাকে স্বাগত জানাতে মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের প্রধান বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছিলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।
বিমান থেকে নেমেই বিশ্বের অন্যতম আলোচিত সমালোচিত নেতা কিম জং উনের সঙ্গে হাত মেলান পুতিন। এরপর তাকে জড়িয়েও ধরেন। এ সময় রুশ প্রেসিডেন্টকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে পুতিন ও কিম একই গাড়িতে চেপে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন কুমসুসান গেস্ট হাউজে আসেন। পুতিনের বসবাসের জন্য যা নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
বিশ্বের দুই আলোচিত নেতার সাক্ষাতে গোটা বিশ্ব কৌতুহলী। প্রশ্ন উঠেছে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন কী চাইবেন রুশ প্রেসিডেন্টের কাছে? অনেকেই বলছেন, স্বার্থ ছাড়া কোনো নেতাই কথা বলবেন না। তাহলে রাশিয়ার কাছে উত্তর কোরিয়ার কী স্বার্থ আছে?
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিম জং উনের প্রধান চাওয়া হলো, ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণে এবং মহাকাশ কক্ষপথে স্পাই স্যাটেলাইট পাঠাতে রাশিয়ার সহযোগিতা। অর্থাৎ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য মহাকাশ প্রযুক্তিতে শক্তিশালী রাশিয়ার সাহায্য দরকার কিমের।
শুধু তাই নয়, পারমাণবিক সাবমেরিন ও স্যাটেলাইট নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষায় রাশিয়ার কাছ থেকে সাহায্য চাইতে পারে উত্তর কোরিয়া। এছাড়া রাশিয়ায় আরও বেশি শ্রমিক পাঠাতে চায় উত্তর কোরিয়া।
বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম হয়তো কিছু পাবেন। তবে রুশ প্রেসিডেন্টের কাছে যা যা চাইবেন তার সব পাবেন না। কারণ, পুতিন জানেন উত্তর কোরিয়া সত্যিকার অর্থে তার সহযোগী নয়। “পুতিন সতর্ক থাকবেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে এমন সামরিক সক্ষমতা দেয়ার ক্ষেত্রে।” এমন কথা বলছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ব্রুস ব্যানেট।
তার সঙ্গে একমত পোষণ করে কারনেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের বিশ্লেষক অঙ্কিত পাণ্ডা বলছেন, “আমাদের এমনটি মনে করা উচিত নয় যে পিয়ংইয়ং রাশিয়ার কাছ থেকে যা চাইবে তাই পাবে।”
তবে, অঙ্কিত পাণ্ডা মনে করেন গত কয়েক দশক ধরে নিজেরাই নিজেদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে উত্তর কোরিয়া। যদিও রাশিয়ার প্রযুক্তি আরও বেশি দরকারি উপকরণ হতে পারে।
অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ব্রুস ব্যানেট বলছেন, “রাশিয়া মনে হচ্ছে স্বল্প ও দূরপাল্লার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহে বেশি আগ্রহী, সঙ্গে সম্ভবত কিছু মাত্রার পারমাণবিক অস্ত্র প্রযুক্তিও।”