বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে অনেকেই দেখছেন ‘যুদ্ধের উস্কানি’ হিসেবে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে থাকা জান্তা সরকারের জন্য যুদ্ধ হতে পারে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার একটি মোক্ষম সুযোগ।
এদিকে সবদিক থেকে স্থিতিশীল বাংলাদেশ এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছে। যুদ্ধ নয় বরং কূটনৈতিকভাবেই সমস্যার সমাধান চাচ্ছে ঢাকা। এই কূটনীতি কিংবা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বাংলাদেশ কিন্তু মিয়ানমারের চাইতে অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে আছে।
তবে যুদ্ধের প্রসঙ্গ সামনে এলেই সামরিক সক্ষমতার প্রশ্নটি কিন্তু সবার আগে চলে আসে। এক্ষেত্রে ঢাকার চাইতে অন্তত ৭ ধাপ এগিয়ে রয়েছে নেপিদো।
আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের সামরিক সামর্থ্যের সূচকে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এরপরেই রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও জাপান। এই তালিকায় মিয়ানমারের অবস্থান ৩৯ আর বাংলাদেশ ৪৬তম।
অন্যদিকে বিবিসির তথ্যমতে, মিয়ানমারের সামরিক বহরে রয়েছে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র থেকে শুরু করে সাবমেরিন ও নজরদারির সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। প্রতি বছর দেশটি তাদের সামরিক সামর্থ্য বাড়াচ্ছে, একইসঙ্গে বাড়ছে প্রতিরক্ষা বাজেট। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্যমতে, প্রতিরক্ষা খাতে মিয়ানমারের বরাদ্দ এখন সাড়ে ২২৮ কোটি মার্কিন ডলার।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীতে সৈন্য সংখ্যা আনুমানিক সাড়ে চার লাখ। আর প্যারা-মিলিটারির সদস্য ৫০ হাজার।
আকাশপথে যুদ্ধের জন্য মিয়ানমারের রয়েছে ২৮০টি বিমানের এক বহর। এর মধ্যে ফাইটার জেট ৫৫টি, প্রশিক্ষণ বিমান ৯৩ ও সংরক্ষিত যুদ্ধবিমানের সংখ্যা ২১টি। যুদ্ধবিমান পরিবাহনকারী যানের সংখ্যা ২৬টি। এছাড়াও হেলিকপ্টার ৮০টি ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার মোট ৯টি।
মিয়ানমারের রকেট প্রজেক্টর আছে ৪৮৬টি। সামরিক যানের মধ্যে মোট ট্যাংক রয়েছে ৬৬৪টি। সাঁজোয়া যান ১৫৮৭টি। এছাড়া স্বয়ংক্রিয় কামানের সংখ্যা ১৯০টি। আর টানা কামান রয়েছে ১৮৬৯টি।
এছাড়া যুদ্ধবহরে নৌযান মোট ১৫৫টি। এর মধ্যে পাঁচটি ফ্রিগেট, তিনটিছোট যুদ্ধ জাহাজ, ও ১৩৩টি টহল জাহাজ। মিয়ানমারের সাবমেরিন একটি। আর মাইন ওয়ারফেয়ার ক্রাফট দুইটি।
নজরদারি চালানো ও হামলা প্রতিহত করার জন্যেও বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।