বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের একটি মন্তব্যে ‘তীব্র প্রতিবাদ’ জানিয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের বক্তব্য ‘জনসমক্ষে দায়িত্বশীলতার প্রয়োজনীয়তা’ তুলে ধরে।
এর আগে, গত ৫ ডিসেম্বর উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করেছিলেন যে, ভারতকে শেখ হাসিনার পদত্যাগে ভূমিকা রাখা ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঢাকার কাছে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বলে শুক্রবার পরররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন।
দিল্লিতে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেশী বাংলাদেশের নেতাদের দায়িত্বশীল মন্তব্যের গুরুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “নয়াদিল্লি সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রকাশ্য মন্তব্য করার সময় দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিতে চায়।”
রণধীর বলেন, “আমরা এই বিষয়ে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমরা জেনেছি, উল্লিখিত পোস্টটি ইতোমধ্যে মুছে ফেলা হয়েছে। তবে আমরা সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, জনসমক্ষে মন্তব্য করার সময় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আরও সতর্ক থাকা উচিত।”
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ভারতের আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন জয়সওয়াল। তিনি বলেন, ভারত বারবার বাংলাদেশের জনগণ ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার আগ্রহের ইঙ্গিত দিয়েছে। এই ধরনের মন্তব্য জনসাধারণের বক্তব্যে দায়িত্বের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। রাজধানীতে বিক্ষুব্ধ জনতার সহিংসতার আশঙ্কায় সামরিক বিমানে করে ঢাকা ছাড়েন তিনি।
পরে বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়নের অভিযোগ করে আসছে ভারত। এ নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবারও নয়াদিল্লি বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দিল্লি বলেছে, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশ সফর শেষে ফিরে যাওয়ার দুই সপ্তাহ পর রাজ্যসভায় দেওয়া বক্তৃতায় দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং ওই মন্তব্য করেন।