ঘরে থাকার আহ্বান উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজধানী মাপুতো এবং অন্যান্য শহরগুলোতে প্রতিবাদে আবার রাস্তায় নামবেন। ৯ অক্টোবরের নির্বাচনের ফলাফলে বিক্ষোভকারীরা ক্ষুব্ধ, যেটিতে দীর্ঘ ক্ষমতাসীন ফ্রেলিমো (মোজাম্বিক লিবারেশন ফ্রন্ট) দলের প্রার্থী ড্যানিয়েল চ্যাপো জয়লাভ করেছেন।
এই নির্বাচনে তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় মন্ডলেন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, ভোটে কারচুপি হয়েছে এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও কিছু অনিয়ম লক্ষ করেছেন। ফলে তারা শত দমন-পীড়ন, গুলির মুখেও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরবর্তী বিক্ষোভের সময় বন্দুকযুদ্ধে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে আরও অন্তত ৬৩ জন।
মোজাম্বিকের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন দল ফ্রেলিমো ৯ অক্টোবরের ভোটে জয়লাভ করেছে। এর ফলে ৪৯ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি দেশ শাসনের ধারাবাহিকতায় আরও একটি মেয়াদ পেল।
নির্বাচন কমিশনের এই ঘোষণার পর সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিরোধী প্রার্থী, সুশীল সমাজ ও পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। নির্বাচন কমিশন জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল ও গুলি ছুড়েছে।
নির্বাচনের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে এলেও বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারীরা আবার রাজপথে নামছে। বুধবার রাতে একটি ফেসবুক লাইভস্ট্রিমে, মন্ডলেন বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া অন্য দফা বিক্ষোভের ডাক দেন। মাপুটোতে, যুবকরা দলে দলে জড়ো হয়েছিলেন, তাদের ফোনে মন্ডলেনকে দেখছিল এবং ‘ভামোস, ভামোস!’ স্লোগান দিচ্ছিল। - মানে ‘চল যাই’। তারা বলছেন, ‘আমরা মরতে প্রস্তুত।’
১৯৭৫ সালে রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহের পর ঔপনিবেশিক শাসক পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার পর থেকে দলটি দেশ শাসন করেছে। এরপর এটি ১৯৭৭ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে বিরোধী রেনামো পার্টির (মোজাম্বিক ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স) সঙ্গে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত হয়।
মোজাম্বিক অর্থনৈতিক অবনতি, দুর্নীতি, উচ্চ স্তরের বেকারত্ব রয়েছে। দেশটিতে প্রচুর গ্যাস মজুত রয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও দেশটি বিখ্যাত।
বিশ্লেষকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে এই নির্বাচনে তরুণদের মধ্যে মন্ডলেনের জনপ্রিয়তা নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে, তবে এতে কোনো সন্দেহ নেই যে প্রেসিডেন্ট নুসি, যিনি দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনি তার ফ্রেলিমো প্রতিপক্ষ, চাপোর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চলেছেন। ৪৭ বছর বয়সী চ্যাপো পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। সূত্র : আল-জাজিরা