বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধান ভ্লাদিমির পুতিন আমৃত্যু রাশিয়ার ক্ষমতায় থাকতে চান। ইউক্রেনের পর এবার তাই যুদ্ধ ঘোষণা করলেন নিজের বার্ধক্যের বিরুদ্ধে। স্বপ্ন দেখছেন আরও তরুণ হয়ে ওঠার। শরীরে তারুণ্যের জোয়ার বইয়ে দিতে।
বয়স আটকে দিয়ে আয়ু বাড়াতে দ্রুত বার্ধক্যরোধী চিকিৎসা পদ্ধতি বা ফর্মুলা আবিষ্কারে বিজ্ঞানীদের নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এক যৌথ প্রতিবেদনে এমন দাবি করেছে সংবাদমাধ্যম মেডুজা এবং সিস্টেমার।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুনের শুরুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে এ ব্যাপারে রাশিয়ান গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, বার্ধক্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সর্বশেষ গবেষণার বিশদ তথ্য হস্তান্তর করতে হবে পুতিনকে।
দেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তির কাছ থেকে এমন আদেশ পেয়ে চাপে পড়েছেন তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উচ্চপদস্থ এক রুশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা যখন প্রেসিডেন্টের এই চিঠি হাতে পান, তখন নিজেদের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
পুতিনের সেই চিঠিতে তার শরীরের কোষের ক্ষয় কমাতে বিশেষজ্ঞদের ‘উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি’ জমা দিতে বলা হয়েছে। যদিও পুতিনের আদেশ নিয়ে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক কিছু বলেনি। ক্রেমলিন থেকেও সরকারিভাবে কিছু স্বীকারও করা হয়নি।
মূলত, ইউরোপ থেকে আমেরিকা, পশ্চিম এশিয়া থেকে আফ্রিকা, যে কোনো মহাদেশের প্রায় প্রতিটি দেশেই ক্ষমতা রয়েছে বয়স্ক নেতাদের হাতেই। টানা পঞ্চমবারের রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বর্তমান বয়স ৭১।
২০০০ সালে পুতিন প্রথমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তখন তিনি চার বছর করে মোট দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। পরে আবার প্রেসিডেন্ট হন তিনি। সেই মেয়াদও শেষ হচ্ছে ২০২৪ সালে।
এখন ২০৩৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে হলে পুতিনের বয়স দাঁড়াবে ৮৩। সেই বয়সে এসে প্রেসিডেন্টের কাজকর্মের ধকল সামলাতে বয়সকে কব্জা করতে হবে। পুতিন তো বটেই, তার মন্ত্রিসভার সদস্যেরাও মোটামুটি সবাই বার্ধক্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছেন।
ফোর্বসের ‘সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের’ তালিকায় নাম রয়েছে পুতিনের। তার সম্পত্তি ও বিলাসবহুল জীবন যেমন বহুলচর্চিত, তেমনই তিনি নিজের বয়স বৃদ্ধি নিয়েও সচেতন। বার্ধক্যের প্রতিকার করার বিষয়ে তার আগ্রহ বরাবরের। বর্তমানে বয়সকে হারিয়ে দেওয়ার নতুন তাগিদ দেখা গিয়েছে রাশিয়ার এই একনায়কের মধ্যে।
এর আগে ২০২২ সালে ব্রিটেনের একটি সংবাদমাধ্যমে চাঞ্চল্যকর দাবি তোলা হয়, পুতিন ক্যানসার বা পারকিনসন্সে ভুগছেন। রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রায় সব সময় দেখা যায় একজন থাইরয়েড ক্যানসার বিশেষজ্ঞকেও।
সমালোচকেরা বলছেন, পুতিন আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকার জন্যই এই কৌশল নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট পদে থাকার জন্য চাই শারীরিক সক্ষমতা। ‘দ্য সান’-এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বার্ধক্য রোধ করতে সাইবেরিয়ান লাল হরিণের শিংয়ের রক্তে স্নান করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।