গণতন্ত্রবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ ও আইনের শাসন বাধাগ্রস্ত করায় মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়েতেমালার ৩০০ নাগরিকের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার এ তালিকায় দেশটির সংসদ কংগ্রেসের অন্তত ১০০ জন সদস্যও রয়েছেন। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেয়।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুয়েতেমালায় গণতন্ত্র ক্ষুণ্ণ করায় এককক্ষবিশিষ্ট কংগ্রেসের ১০০ জনসহ প্রায় ৩০০ নাগরিকের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বেসরকারি খাতের কিছু প্রতিনিধি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদেরও লক্ষ্য করে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন আইনের গোপনীয়তা কারণে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হবে না। তবে তাদের গণতন্ত্র বা আইনের শাসন ক্ষুণ্ণ করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা হয়েছে।
গত সপ্তাহের শেষের দিকে গুয়েতেমালার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত বেরনার্ডো আরেভালোর জয় বাতিল চেয়ে আইনি পদক্ষেপ নেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল কনসুয়েলো পোরাস নির্বাচনী জয়কে বাতিল করার অপচেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করেন আরেভালোর। একই সঙ্গে তার জয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপকে ‘ন্যায়ভ্রষ্ট’ ও ‘অভ্যুত্থানচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেন তিনি।
গত আগস্ট মাসে রান-অব নির্বাচনে আরেভালোর নিরঙ্কুশ জয়ের পর গুয়েতেমালার নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং দলীয় প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছে অ্যাটর্নি জেনারেল কনসুয়েলো পোরাসের কার্যালয়। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘গুয়েতেমালার জনগণ তাদের কথা বলেছেন। তাদের বক্তব্যকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।”
আরেভালো গত জুন মাসে গুয়েতেমালার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম ধাপে ব্যাপক জনসমর্থন পান। এরপর গত আগস্ট মাসে দ্বিতীয় দফার রান-অব ভোটে সেনাবাহিনী সমর্থিত বিরোধী প্রার্থীর বিপক্ষে জয় পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।
এদিকে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে গুয়েতেমালার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আলেজান্দ্রো গিয়ামাত্তেই এবং কংগ্রেসের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
মার্কিন সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত ও অগণতান্ত্রিক নেতাদের করা তালিকায় ইতিমধ্যে গুয়েতেমালার অ্যাটর্নি জেনারেল পোরাস, তার জ্যেষ্ঠ সহযোগী রাফায়েল কুরুচিচে এবং ফ্রেডি ওরেলানার নামও যুক্ত করা হয়েছে। জুনের প্রথম দফার ভোটে ভালো ফল করার পর আগস্টের দ্বিতীয় দফার রান-অবের আগ মুহূর্তে আরেভালোর মধ্য বামপন্থী রাজনৈতিক দল সিড ম্যুভমেন্ট পার্টির নিবন্ধন বাতিলের আদেশ দিয়েছিলেন পোরাসের সহযোগী আইনজীবী ফ্রেডি।