শিশু-কিশোরদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের কুফল নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। একদল মার্কিন শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞ ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের কাছে একটি চিঠি লিখে শিশুদের জন্য এ প্লাটফর্মটি বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে ব্রিটেনের চিকিৎসক রঙ্গন চ্যাটার্জী বলছেন, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মানসিক সমস্যা এবং তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের মধ্যে যে একটা সম্পর্ক আছে তার অনেক প্রমাণ তিনি পেয়েছেন।
তিনি বলেন, “তারা তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন যে সামাজিক মাধ্যমের কারণে কিশোর-কিশোরীদের মানসিকতায় অস্বাভাবিক সব পরিবর্তন হচ্ছে, ১০ বছরের মেয়েও তার দৈহিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগছে।”
আর তাইতো যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা রাজ্যে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে অভিভাবকের সম্মতি নেওয়ার বিধান রেখে দুটি বিলে স্বাক্ষর করেছে।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) বিবিসি ও ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। রাজ্যের গভর্নর স্পেন্সার কক্স বৃহস্পতিবার এই বিল দুটিতে স্বাক্ষর করেন। নতুন এই পদক্ষেপের অধীনে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টগুলোর পোস্ট কিংবা বার্তার সম্পূর্ণ প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে তাদের অভিভাবকদের।
কক্স সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে বলেন, “আমরা আর সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে আমাদের তরুণ ও শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে দিতে রাজি নই।”
রিপাবলিকান এ গভর্নর আরও বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর কারণে তরুণদের হতাশা এবং অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে।
একজন নেতা ও অভিভাবক হিসেবে আমাদের শিশু ও কিশোরদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের রয়েছে।”
প্রণীত এ আইন অনুযায়ী, এখন থেকে ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক ও টিকটকের মতো মাধ্যমগুলোতে শিশু-কিশোরদের অ্যাকাউন্ট তৈরি করার আগে তাদের মা-বাবা বা অভিভাবকের স্পষ্ট সম্মতি প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি রাত সাড়ে ১০টা থেকে সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের এই মাধ্যম বা অ্যাপলিকেশনগুলো ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে মা-বাবার পর্যবেক্ষণে ব্যতিক্রম হতে পারে।
এই আইন অনুযায়ী, সংস্থাগুলো আর কোনো শিশুর তথ্য সংগ্রহ করতে বা বিজ্ঞাপনের জন্য টার্গেট করতে পারবে না। নতুন আইন না মানলে দেওয়ানি বা ফৌজদারি আদালতে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া আরও সহজ করার জন্য তৈরি করা বিল দুটি ২০২৪ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকর হবে।