মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা শেষ করেছে এবারের দুই বড় প্রতিদ্বন্দী দল। বিশ্বমোড়ল খ্যাত দেশটির নির্বাচন ঘিরে দেশ-বিদেশে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ ও কৌতূহল তৈরি হয়েছে। সারা বিশ্ব চেয়ে আছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে। তবে জানেন কি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কীভাবে হয়?
চার বছর পরপর আমেরিকায় নির্বাচন হয় এবং নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পর যে মঙ্গলবার পড়ে, সেদিনই ভোটগ্রহণ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনা পদ্ধতি দুটি। একটি হলো মাথাপিছু ভোট, যাকে বলে পপুলার ভোট। অপরটি হলো অঙ্গরাজ্যভিত্তিক ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় লাভ করার জন্য পপুলার ভোটের চেয়ে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
নির্বাচনের দিনে দেশজুড়ে কয়েক হাজার শহরে ভোটগ্রহণ চলে। নিবন্ধিত যেকোনো মার্কিন নাগরিক এই নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন। যারা অসুস্থতা, প্রতিবন্ধিতা, ভ্রমণ বা অন্য কোনো কারণে দেশ বা অঙ্গরাজ্যের বাইরে থাকায় ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন না, তাদের জন্য ডাকযোগে ভোট দেয়ার সুযোগ রয়েছে।
এর আগে প্রাইমারি ও ককাস মাধ্যমে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীর সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়। গোপন ব্যালটের মাধ্যমে প্রাইমারির নির্বাচন হয়। আর অঙ্গরাজ্যগুলোতে রাজনৈতিক দলের সদস্যরা একত্রিত হয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থী বাছাই করার পদ্ধতি হলো ককাস।
এসব পদ্ধতির মাধ্যমে দলগুলো তাদের প্রার্থী বাছাই করে। ফলে নির্বাচনের দিন ভোট উন্মুক্ত থাকলেও প্রার্থীর সংখ্যা কমে আসে। এভাবে প্রার্থী নির্বাচন শেষ হলে দলগুলো জাতীয় কনভেনশনের (সম্মেলন) মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাই করে। আর এই প্রক্রিয়াও হয় ভোট গ্রহণের মাধ্যমে।
কারা প্রার্থী হতে পারেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন- প্রার্থীকে জন্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে, বয়স অন্তত ৩৫ বছর এবং ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে হবে। এমনকি অপরাধী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিরও প্রার্থী হতে পারবেন। তবে রাজনৈতিক পদে থাকা ব্যক্তি দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে যুক্ত হলে বা শত্রুদের সহায়তা করলে তিনি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারবেন না।
ভোট দিতে পারেন যারা
বাংলাদেশের মতোই আঠারো বছর বা তার উপরের যেকোনো মার্কিন নাগরিক নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। তবে এর আগে ভোটার নিবন্ধন করতে হয়। ভোটা নিবন্ধন প্রক্রিয়ার সময় কোনো ব্যাক্তি যদি দেশের বাইরে থাকে তিনিও নিবন্ধনে নাম লেখাতে পারেন। এক্ষেত্রে পোস্টাল ব্যালটে বা ডাকযোগে ভোট দেওয়ার জন্যও তারা আবেদন করতে পারেন।